রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের এক কর্মচারীকে মারধরের ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করে হলের প্রাধাক্ষ্য ড. মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, “গতকালকের ঘটনার পরে আমরা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে রাতে হলেই অবস্থান করি। এরপর আজ সকালে আতিকের নেতৃত্বে সানি, আকাশসহ বেশ কয়েকজন হলের গার্ড মনিরুল ইসলামকে প্রচন্ড মারধর করে। আজ ছাত্রকে মারছে, কর্মচারীকে মারছে যারা আমাদের হলকে নিরাপত্তা দেয়। কয়েকদিন পর হয়তো আমাদেরও মার খেতে হবে। এই ঘটনায় আমরা ওই কর্মচারীকে অভিযোগ দিতে বলেছি। আজ সন্ধ্যায় আমাদের একটা মিটিং আছে। আমরা দ্রুত একটা তদন্ত কমিটি গঠন করবো।”
রোববার (১২ মে) সকাল সাড়ে ছয়টা রাবি ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা-কর্মী সোহরাওয়ার্দী হলের গেটে এ ঘটনা ঘটায়।
ভুক্তভোগী কর্মচারি মনিরুল ইসলাম। তিনি শহীদ সোহরাওয়ার্দী হলের গার্ডের দায়িত্বে আছেন।
অন্যদিকে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা সোহরাওয়ার্দী হলের সহসভাপতি ও ইনিস্টিউট অব এডুকেশন এন্ড রিসার্চ (আইইআর) বিভাগের আতিকুর রহমান, মাদার বক্স হল ছাত্রলীগ কর্মী ও গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী শামসুল আরিফিন খান সানি এবং একই বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী ও মতিহার হল ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশসহ আরও কয়েকজন। সকলেই বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর অনুসারী বলে জানা গেছো।
ভুক্তভোগী কর্মচারী মনিরুল ইসলাম বলেন, সকালে সাড়ে ছয়টার দিকে আতিকের নেতৃত্বে আকাশ, সানিসহ বেশ কয়েকজন আমাকে মারধর করে। আমি নাকি নিয়াজ মোর্শেদকে সহযোগিতা করেছি সেজন্য তারা আমাকে হাতে, গালে, মাথায় কিল-ঘুশি ও লাঠি দিয়ে আঘাত করে। আমি বিষয়টি হল প্রোভোস্টকে জানিয়েছি। তারা আমাকে অভিযোগ পত্র দিতে বলেছেন। আমি এর সুষ্টু বিচার চাই।
এবিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত মতিহার হল ছাত্রলীগ কর্মী আজিজুল হক আকাশ বলেন, আমরা সকালে হলে যাই। সেখানে গিয়ে গার্ডকে আমাদের সন্দেহ হয়। আমরা তার ফোন চেক করে দেখতে পাই সে শিবির, ছাত্রদল ও নিয়াজ মোর্শদকে আমাদের তথ্য পাচার করেছে৷ মারধরের তেমন কোনো ঘটনা ঘটেনি তবে দুই একটা চর-থাপ্পর দেওয়া হয়েছে।
আরেক অভিযুক্ত মাদার বক্স ছাত্রলীগ কর্মী শামসুল আরিফিন খান সানি অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এটার সাথে আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। মারধরের ঘটনা ঘটেছে কিনা সেটাও আমার জানা নেই।
এবিষয়ে জানতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবুর সাথে ফোন কল এবং মেসেজের মাধ্যমে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও যোগাযোগ সম্ভব হয়নি।
এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক আসাবুল হক বলেন, সকালের ঘটনা আমরা জেনেছি। যেহেতু এটি হলের বিষয় তাই হল প্রশাসনকে বিষয়টি দেখতে বলা হয়েছে। হল প্রশাসন এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিবে।
প্রসঙ্গত, গতকাল দিবাগত রাতে রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বাবু ও সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লাহ-হিল-গালিব গ্রুপ ও সোহরাওয়ার্দী হল সভাপতি নিয়াজ মোর্শেদের গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেখানে পাঁচটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। তিন ঘণ্টা পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসন। সেখানেই নিয়াজ মোর্শেদকে তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করার সন্দেহে সোহরাওয়ার্দী হলের গার্ডকে মারধরের ঘটনা ঘটে।