ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনের নেতৃত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ঝাঁক তরুণ মেধাবী শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে স্বতন্ত্র ছাত্র সংগঠন আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে। তবে নতুন এ সংগঠনের নাম কী হতে পারে তা এখনো জানা যায়নি।
গতকাল সোমবার (২ অক্টোবর) রাতে এক বিবৃতিতে এ তথ্য নিশ্চিত করেন ডাকসুর সাবেক নেতা আখতার হোসেন। মঙ্গলবার (৩ অক্টোবর) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) মধুর ক্যান্টিনে এক সংবাদ সম্মেলনে আনুষ্ঠানিকভাবে এ সংগঠনের ঘোষণা দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।
ডাকসুর সাবেক এ নেতার পাঠানো বিবৃতিতে বলা হয়, আমরা দেখতে পাচ্ছি যে বাংলাদেশ আজ এক ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। ইতিহাসের ভুলত্রুটি শুধরে বর্তমানের সংকট নিরসন করে এক নতুন বাংলাদেশ বিনির্মাণের প্রত্যাশা সবার। এর জন্য প্রয়োজন সময়োপযোগী রাজনীতি, চিন্তা ও নেতৃত্ব গঠন।
বাংলাদেশে ঐতিহাসিকভাবে ছাত্ররাজনীতি নেতৃত্ব বিকাশ ও রাজনৈতিক শিক্ষার আঁতুড়ঘর হিসেবে কাজ করেছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বন্দোবস্ত ও শিক্ষাব্যবস্থায় যে দীর্ঘমেয়াদি ক্ষত ও অব্যবস্থাপনা তৈরি হয়েছে তার পুনর্গঠনে প্রয়োজন দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও ধারাবাহিক সক্রিয়তা। এ কার্যক্রমে শিক্ষার্থী ও তরুণদের রাজনৈতিক অংশগ্রহণ ও নেতৃত্ব অতি জরুরি বিষয়।
শিক্ষার্থীদের রাজনীতিবিমুখের কারণ উল্লেখ করে বলা হয়, করোনা-পরবর্তী সময়ে ছাত্ররাজনীতি যেন মুখ থুবড়ে পড়েছে। ২০১৯ সালের ডাকসু নির্বাচনের উত্তাপের রেশ কাটতে না কাটতেই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসগুলোতে তৈরি হয়েছে রাজনৈতিক শূন্যতা। আমরা আশা করেছিলাম ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে ও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও ছাত্র সংসদ চালু হবে এবং ছাত্র নেতৃত্ব তৈরি হবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করলাম, ক্যাম্পাসগুলোতে রাজনৈতিক পরিসর আরও সংকুচিত হয়েছে।
বিবৃতিতে বলা হয়, নতুন সংগঠন গড়ার লক্ষ্যে আমরা গত কয়েক মাস ধরে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিকভাবে সক্রিয় শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে একটি নতুন ছাত্র সংগঠন গঠন করার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছি। শিক্ষাব্যবস্থার পুনর্গঠন, শিক্ষার্থী কল্যাণ, রাজনৈতিক পরিসর ও নেতৃত্ব তৈরির লক্ষ্যে ৪ অক্টোবর (বুধবার) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে একটি জাতীয় ছাত্র সংগঠনের ঘোষণা ও আত্মপ্রকাশ উপলক্ষ্যে আমরা একটি সংবাদ সম্মেলন আহ্বান করছি।
নতুন ছাত্র সংগঠনের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করে বলা হয়, ছাত্ররাজনীতির এ পর্যালোচনা ও নতুন একটি ছাত্ররাজনীতি বিকাশের লক্ষ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ও জনপরিসরে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বিভিন্ন আড্ডা, সেমিনার ও প্ল্যাটফর্ম তৈরি হয়েছে। কিছু শিক্ষার্থী চিন্তা বিনির্মাণের লক্ষ্যে এসব উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। পাশাপাশি ক্রিয়াশীল বিভিন্ন সংগঠনের প্রতি শিক্ষার্থীদের অনাস্থা তৈরি হয়েছে। সামগ্রিক পরিস্থিতি বিবেচনায় শিক্ষার্থীদের রাজনৈতিক বিকাশের জন্য আমরা একটি নতুন প্ল্যাটফর্মের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।