The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ১৯শে মার্চ, ২০২৪

অস্বাভাবিক রাগের কারণ, শরীরে কী প্রভাব ফেলে

রাগ মানুষের থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত রাগ অস্বাভাবিক। এর পেছনে লুকিয়ে থাকে কোনো না কোনো মানসিক রোগ। অতিরিক্ত রাগ শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পারিবারিক, সামাজিক জীবন ও পেশাগত জীবনকে ব্যাহত করে।

অস্বাভাবিক রাগের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মানসিক ও মাদকাসক্তি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. হারুনুর রশীদ।

রাগের কারণ

জেনেটিক : বংশগত।

পরিবেশগত : অত্যাধিক এবং দীর্ঘ মেয়াদি চাপ।

দীর্ঘ মেয়াদি উৎপীড়ন/উত্ত্যক্তকরণ।

অতিরিক্ত ক্লান্তি, ক্ষুধা, ঘুমের অভাব।

বঞ্চিত থাকা (deprivation) অর্থনৈতিক, সামাজিক, পেশাগত জীবনে দীর্ঘ মেয়াদি বঞ্চিত করা, স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার অভাব।

নেশা দ্রব্য সেবন : অতিরিক্ত রাগের অন্যতম প্রধান কারণ।

সম্পর্কগত সমস্যা : Conflict, স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্বমূলক সম্পর্ক।

অতিরিক্ত টিভি দেখা, পর্নোগ্রাফি আসক্তি, ইন্টারনেট বা ফেসবুকে আসক্তি।

ইমপাল্র কন্ট্রোল ডিসঅর্ডার : যারা কোনো কারণ ছাড়াই রাগে ফেটে পড়েন, রাগে ফোস ফোস করতে থাকে, অস্বাভাবিক আচরণ করে, পরে ভুল বুঝে। আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা এ রোগে ভুগছে।

নিউরোট্রান্সমিটারের ইমবেলেন্স, যেমন : সেরোটিনের অভাব মস্তিষ্কে হলে রাগ বেড়ে যায়।

অন্যান্য : অস্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, বিষণ্ণতা, অতিরিক্ত টেনশন, শুচিবাই, বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রোনিয়া।

দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা : ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, হাড় ভাঙা, ঈর্ষা, পারকিনসনিজম, স্ট্রোক, মৃগীরোগ, ব্রেইন টিউমার, লিভার, কিডনি ও হার্টফেইলুরের রোগী।

চিকিৎসা : ফিজিক্যাল ওষুধ, সাইকোলজিক্যাল এবং স্যোসাল।

ওষুধ : TCA, SSRI, SNRI (বিষণ্ণতানাশক ওষুধ)। Antipsychotic, বেনজোডায়েজিপিন (তিন সপ্তাহের বেশি নয়)।

সাইকোলজিক্যাল : CBT, Family Therapy, (ফ্যামিলি থেরাপি)। এনগার ম্যানেজমেন্ট (Management) রিলাক্সজেশন থেরাপি। দীর্ঘ মেয়াদি কাউন্সিলিংই অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোত্তম পন্থা (Anger management) রাগের চিকিৎসা করলে হবে না, রাগের পেছনে লুকিয়ে থাকা মানসিক রোগ শনাক্ত করে ট্রিটমেন্ট করতে হবে।

অতিরিক্ত রাগের শারীরিক প্রভাব : হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি, বুকে চাপ অনুভব, IHD (দীর্ঘ মেয়াদে), শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, দীর্ঘ মেয়াদে হাইপারটেনশন, মাথাব্যথা, চুল পড়ে যাওয়া, মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস থেকে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ, cortisol হরমোন রক্তে বেশি থাকলে দীর্ঘ মেয়াদি হার্টে সমস্যা হতে পারে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে জীবাণুজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন। পারিবারিক এবং পেশাগত জীবনে এর সুফল ভোগ করুন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. লাইফ স্টাইল
  3. অস্বাভাবিক রাগের কারণ, শরীরে কী প্রভাব ফেলে

অস্বাভাবিক রাগের কারণ, শরীরে কী প্রভাব ফেলে

রাগ মানুষের থাকবে এটাই স্বাভাবিক। তবে অতিরিক্ত রাগ অস্বাভাবিক। এর পেছনে লুকিয়ে থাকে কোনো না কোনো মানসিক রোগ। অতিরিক্ত রাগ শরীরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। পারিবারিক, সামাজিক জীবন ও পেশাগত জীবনকে ব্যাহত করে।

অস্বাভাবিক রাগের কারণ ও প্রতিকার নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন মানসিক ও মাদকাসক্তি রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো. হারুনুর রশীদ।

রাগের কারণ

জেনেটিক : বংশগত।

পরিবেশগত : অত্যাধিক এবং দীর্ঘ মেয়াদি চাপ।

দীর্ঘ মেয়াদি উৎপীড়ন/উত্ত্যক্তকরণ।

অতিরিক্ত ক্লান্তি, ক্ষুধা, ঘুমের অভাব।

বঞ্চিত থাকা (deprivation) অর্থনৈতিক, সামাজিক, পেশাগত জীবনে দীর্ঘ মেয়াদি বঞ্চিত করা, স্নেহ, মমতা, ভালোবাসার অভাব।

নেশা দ্রব্য সেবন : অতিরিক্ত রাগের অন্যতম প্রধান কারণ।

সম্পর্কগত সমস্যা : Conflict, স্বামী-স্ত্রী, মা-বাবা, ভাই-বোন, সন্তানের সঙ্গে দ্বন্দ্বমূলক সম্পর্ক।

অতিরিক্ত টিভি দেখা, পর্নোগ্রাফি আসক্তি, ইন্টারনেট বা ফেসবুকে আসক্তি।

ইমপাল্র কন্ট্রোল ডিসঅর্ডার : যারা কোনো কারণ ছাড়াই রাগে ফেটে পড়েন, রাগে ফোস ফোস করতে থাকে, অস্বাভাবিক আচরণ করে, পরে ভুল বুঝে। আমাদের সমাজে অনেক লোক আছে যারা এ রোগে ভুগছে।

নিউরোট্রান্সমিটারের ইমবেলেন্স, যেমন : সেরোটিনের অভাব মস্তিষ্কে হলে রাগ বেড়ে যায়।

অন্যান্য : অস্বাভাবিক ব্যক্তিত্ব, বিষণ্ণতা, অতিরিক্ত টেনশন, শুচিবাই, বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডার, সিজোফ্রোনিয়া।

দীর্ঘ মেয়াদি শারীরিক অসুস্থতা : ব্যথা, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হাঁপানি, হৃৎপিণ্ডের সমস্যা, হাড় ভাঙা, ঈর্ষা, পারকিনসনিজম, স্ট্রোক, মৃগীরোগ, ব্রেইন টিউমার, লিভার, কিডনি ও হার্টফেইলুরের রোগী।

চিকিৎসা : ফিজিক্যাল ওষুধ, সাইকোলজিক্যাল এবং স্যোসাল।

ওষুধ : TCA, SSRI, SNRI (বিষণ্ণতানাশক ওষুধ)। Antipsychotic, বেনজোডায়েজিপিন (তিন সপ্তাহের বেশি নয়)।

সাইকোলজিক্যাল : CBT, Family Therapy, (ফ্যামিলি থেরাপি)। এনগার ম্যানেজমেন্ট (Management) রিলাক্সজেশন থেরাপি। দীর্ঘ মেয়াদি কাউন্সিলিংই অতিরিক্ত রাগ নিয়ন্ত্রণে আনার সর্বোত্তম পন্থা (Anger management) রাগের চিকিৎসা করলে হবে না, রাগের পেছনে লুকিয়ে থাকা মানসিক রোগ শনাক্ত করে ট্রিটমেন্ট করতে হবে।

অতিরিক্ত রাগের শারীরিক প্রভাব : হৃৎপিণ্ডের গতি বৃদ্ধি, বুকে চাপ অনুভব, IHD (দীর্ঘ মেয়াদে), শ্বাসকষ্ট, রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া, দীর্ঘ মেয়াদে হাইপারটেনশন, মাথাব্যথা, চুল পড়ে যাওয়া, মাংসপেশি শক্ত হয়ে যাওয়া, মস্তিষ্কের হাইপোথেলামাস থেকে কর্টিসল হরমোন নিঃসরণ, cortisol হরমোন রক্তে বেশি থাকলে দীর্ঘ মেয়াদি হার্টে সমস্যা হতে পারে। দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে জীবাণুজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে পারে। রাগকে নিয়ন্ত্রণ করুন। শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকুন। পারিবারিক এবং পেশাগত জীবনে এর সুফল ভোগ করুন।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন