জাবি প্রতিনিধি : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ( জাবি) ২০২৩-২৪ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি-ইচ্ছুক চার অসচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীর ভর্তি ব্যয় ভার গ্রহণ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা।
ইচ্ছা সামাজিক সংগঠন থেকে আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তরা হচ্ছেন রসায়ন বিভাগে চান্সপ্রাপ্ত রবিউল ইসলাম , অর্থনীতি বিভাগে চান্স প্রাপ্ত তারিন আক্তার, ইংরেজি বিভাগে চান্সপ্রাপ্ত মাইমুন্নাহার এবং বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনোটিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগে চান্সপ্রাপ্য শিক্ষার্থী রায়হান হোসেন।
আর্থিক সহযোগিতা প্রাপ্তদের মধ্য থেকে রসায়ন বিভাগে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থী বলেন, “আমার ভর্তির টাকা গোছাতে আমার পবিরাব হিমশিম খাচ্ছিল।এমন অবস্থায় ইচ্ছার শিক্ষা বৃত্তির খোঁজ পাই। তাদেরকে আমার বিষয়টা জানাই।তারা আমার ভর্তির সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেয়।এতে আমার পরিবার এবং আমি অনেক খুশি।আশা করি পরবর্তীতেও আমাকে এরকম আর্থিক ভাবে সাহায্য করে আমার পরিবারের মুখে হাসি ফুটাবে। ধন্যবাদ ইচ্ছাকে।
অর্থনীতি বিভাগে ভর্তি হওয়া এক শিক্ষার্থী অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে বলেন, অনেক ভালো লাগছে, স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেয়েও ভর্তি নিয়ে চিন্তিত ছিলাম। এখন সবকিছু আপনাদের সহায়তায় সম্পূর্ণ হয়েছে। আমি অনেক খুশি। ধন্যবাদ “ইচ্ছা” সংগঠনকে।
ইচ্ছা’র সভাপতি আল-আমিন ইমন বলেন, খুবই ভালো লাগছে ভর্তিচ্ছুক শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে পেরে। এবারের ভর্তি ফি পূর্বের তুলনায় বেশি হওয়াতে আমরা কিছুটা শঙ্কিত ছিলাম ফান্ড সংগ্রহের সময়। তবে আমরা যে অভূতপূর্ব সারা পেয়েছি তা হয়তো জাহাঙ্গীরনগর বলেই সম্ভব। ধন্যবাদ সকলকে যারা আমাদেরকে বিভিন্নভাবে সাহায্য করেছেন। আশা করি আগামীতেও আমরা সকলেই এভাবে কারও না কারও স্বপ্নপূরণে সহযোগী হতে পারবো।
দারিদ্র্যকে জয় করে জাবিতে চান্স প্রাপ্ত এই চার শিক্ষার্থীর ভর্তির বিষয়ে ইচ্ছা’র সাধারণ সম্পাদক শাহ আলম বলেন, আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে প্রতি বছর ভর্তি পরীক্ষায় জাবিতে ভর্তি সংক্রান্ত ব্যাপারে কেউ আর্থিক সংকটে পড়লে আমরা ভর্তির সমস্ত ব্যয়ভার বহন করি। বিগত দুই বছরে (৫১ ও ৫২ আবর্তনের) চারজন শিক্ষার্থীর ভর্তি ব্যায়ভার গ্রহণ করেছিলো ইচ্ছা সামাজিক সংগঠন। তারই ধারাবাহিকতায় এ বছরও আমরা চারজন শিক্ষার্থীর পাশে দাঁড়াতে পেরেছি।আর্থিক সমস্যার কারণে কোন মেধাবী শিক্ষার্থীর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির স্বপ্ন যেন হারিয়ে না যায় সেজন্যই আমাদের এই উদ্যোগ। ভবিষ্যত আমাদের এই উদ্যোগ অব্যাহত থাকবে।এছাড়া আমাদের এরকম মানবিক কার্যক্রমগুলো পরিচালনা করতে যারা আর্থিক সহযোগিতা করেছেন বিশেষ করে ক্যাম্পাসের সিনিয়র ভাই- আপুরা, তাদের প্রতি আমরা বিশেষ ভাবে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
ভর্তির সময়ে ইচ্ছা’র প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও পরিচালনা পর্ষদের সদস্য নুরুজ্জামান শুভ, সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও বর্তমান মডারেটর জাকিয়া সুলতানা পিংকি, সাবেক সভাপতি ও বর্তমান মডারেটর মেহেদী বাদশা,বর্তমান সহ-সভাপতি তানজিদ বিশ্বাস রিচ, শাহজালাল আকাশ, সাংগঠনিক সম্পাদক সোহান, দপ্তর সম্পাদক মো.তারিফ এবং অর্থ সম্পাদক আতিকুর রহমান আতিক উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, জাবিতে ২০১৮ সাল প্রতিষ্ঠিত সামাজিক সংগঠন ইচ্ছা ক্যাম্পাসে এবং ক্যাম্পাসের বাইরে নানাবিধ সামাজিক কার্যক্রমের সাথে জড়িত রয়েছে। ক্যাম্পাসে শহিদ আজাদ-রুমী গ্রন্থাগার পরিচালনা, রমজানে ইফতার,ইদে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, ইদ বস্ত্র উপহার খাদ্য সামগ্রী বিতরণ, বন্যায় ত্রাণ বিতরণ, শীতে শীতবস্ত্র বিতরণ, ভর্তি পরীক্ষার সময়ে বিনামূল্যে মোবাইল, ব্যাগ জমা রাখা, বৃক্ষ রোপণ সহ নানা বিধ সামাজিক কার্যক্রম পরিচালনা করে থাকে।