The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ৩রা ডিসেম্বর, ২০২৪

অর্থাভাবে চিকিৎসাহীনতায় ভুগছেন আরিফ; চাচ্ছেন বিত্তবানদের সহযোগিতা

মোঃ শরীফুল ইসলাম; বেরোবিঃ বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিবিদ্ধ হয়ে টাকার অভাবে চিকিৎসা করতে পারছেন না কুড়িগ্রাম জেলার মুন্সিপাড়া এলাকার আরিফুল ইসলাম আরিফ। পরিবারের একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তির এরকম পরিস্থিতির কারণে পুরো পরিবারের অচলাবস্থা। বাম পায়ের রানে গুলিবিদ্ধ হয়ে বিছানায় কাতরানো আরিফ চিকিৎসার জন্য বিত্তবানদের সহযোগিতা চেয়েছেন।

জানা যায়, আরিফুল ইসলাম কুড়িগ্রাম জেলার মুন্সিপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা ও মরহুম বখতার আলীর ছেলে। তিনি কর্মসংস্থানে ঢাকার শাহজাদপুরে ইলেকট্রিকের কাজ করতেন। গত ২০ জুলাই ঢাকা শাহজাদপুর পৌরসভার বাড্ডা নামক স্থানে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন তিনি। একপর্যায়ে শহরের বাড্ডা নামক এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করলে পুরো এলাকা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়ে।

শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে আরিফ অংশগ্রহণ করে গুলিবিদ্ধ হলে সেখানে উপস্থিত শিক্ষার্থীরা তাকে মেডিকেলে নিয়ে যায়। কিন্তু প্রথম মেডিকেলে তাকে ফেরত দেয়, পরবর্তীতে দ্বিতীয় মেডিকেলে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেও তাকে চিকিৎসা করতে পারবে না বলে জানান চিকিৎসকরা। এবং তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেয়। পরবর্তীতে তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজে নিয়ে যাওয়া হয়।

স্থানীয় আজিজ সাহেব জানান, আরিফ ঢাকায় ইলেকট্রিকের কাজ করতো। তার বাবার দু’বছর হলো মৃত্যু হয়েছে। পরিবারের একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি হলেন আরিফ। এখন ছেলের যে গতি হলো তাতে তার দুভোর্গ আরও বেড়ে গেল।

আরিফের মা বলেন, আমি এক হতভাগা নারী। আমার ছেলের উপার্জন দিয়ে আমাদের পরিবার চলত। তার চার বছর বয়সের একটা মেয়েও আছে। এখন সে নিজেই তো কাজ করতে অক্ষম। আমাদের পরিবার কিভাবে চলবে বুঝতে পারছি না। ছেলে আন্দোলনে গিয়ে আহত হয়েছে। মাসখানেক হাসপাতালে থাকলেও টাকার অভাবে চিকিৎসা শেষ না করে বাড়ি চলে আসি।

গুলিবিদ্ধ আরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে আন্দোলনে শুরু থেকে অংশগ্রহণ করেছিলাম কিন্তু ২০ জুলাই বিজিবির ছোঁড়া গুলিতে আমি গুলিবিদ্ধ হই। গুলিবিদ্ধ হলে তৎক্ষনাৎ ছাত্র ভাইয়েরা এসে আমাকে জরুরি ভিত্তিতে মেডিকেলে নিয়ে যায়। কিন্তু পরপর কয়েকটি মেডিকেল আমাকে ফেরত দিলে সবশেষে আমাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। গুলিবিদ্ধ হওয়ার ১৫ দিন পর আকিজ গ্রুপের সহায়তায় আমার গুলিবিদ্ধ স্থানে সেলাই করা হয় এবং ড্রেসিং করা হয়। পরবর্তীতে আর কোন খোঁজ খবর নেওয়া হয় না। পরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে একজন ছাত্র ভাই আসে এবং আমাকে জিজ্ঞেস করে আমার বাসা কোথায় আমার নাম কি? আমি তাকে বলি যে আমার নাম এবং আমার বাসা আছে কুড়িগ্রাম জেলায়। অত:পর সেখানে আমাকে ৩১ দিন পর অর্থাৎ ১৯শে আগস্ট আমার অপারেশন করা হয় কারণ আমার যেখানে গুলি লেগেছে সেখানের হাড় ছিদ্র হয়ে গুলি বের হয়ে যায়। চিকিৎসকেরা বলেছে আপনার এই সমস্যাটা অনেক জটিল; তাই ছয় মাস অথবা এক বছর পর পুনরায় অপারেশন করা লাগতে পারে। তাছাড়া এর আগে আমার চিকিৎসার যাবতীয় খরচ বহন করতে আমার স্ত্রীর গলার হার বিক্রি করি। কিন্তু বর্তমানে আমার এই টাকাটা আজ থেকে শেষ হয়ে গেল। কোনো বৃত্তবান ব্যক্তি অথবা সরকারের কাছে আমার চিকিৎসা ও পরিবারের জন্য সহযোগিতা করার জন্য অনুরোধ জানাই। আমি আমি ঢাকায় ইলেকট্রিকের কাজ করতাম কিন্তু এখন তো আমার কাজ করার সামর্থ্য নেই । তাছাড়া আমি আমার পরিবারের একমাত্র উপার্জন সক্ষম ব্যক্তি ছিলাম, এখন তো আমার এই অবস্থা। আমি খুব চিন্তিত যে আমার পরিবার কিভাবে চালাবো? কীভাবে আমার চিকিৎসার খরচ বহন করব?

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.