ভারতের অরুণাচল প্রদেশের তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার (এলএসি) কাছে চীনের সৈন্যদের সাথে ভারতীয় সামরিক বাহিনীর সদস্যদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
গত শুক্রবার (৯ ডিসেম্বর) উভয় দেশের সৈন্যদের মাঝে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটলেও তা প্রকাশ্যে এসেছে গতকাল সোমবার।
ভারতীয় বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের বরাত দিয়ে রয়টার্স বলছে, ওই সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কয়েকজন সৈন্য আহত হয়েছেন। সংঘর্ষ পরবর্তী পতাকা বৈঠকের পর দুই দেশের সৈন্যরা নিজ নিজ ভূখণ্ডে চলে যান।
এই বিষয়ে তাৎক্ষণিকভাবে মন্তব্যের অনুরোধে ভারতের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র সাড়া দেননি বলে জানিয়েছে রয়টার্স। এর আগে, ২০২০ সালের জুন মাসে লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় চীনা-নিয়ন্ত্রিত তিব্বত মালভূমিতে ভারতীয় ও চীনা সৈন্যদের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল। সেই সময় উভয় দেশের সৈন্যরা হাতাহাতি, কিল-ঘুষিতে জড়িয়ে পড়েন।
ভারতীয় কর্তৃপক্ষ সীমান্তে চীনা সৈন্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে ভারতের সামরিক বাহিনীর অন্তত ২০ সৈন্য নিহত হন বলে সেই সময় স্বীকার করে। যদিও চীন ওই সংঘাতের ঘটনায় তাদের কোনও সৈন্য হতাহত হয়েছে কিনা তা প্রকাশ করেনি।
তবে ভারতীয় বিভিন্ন গণমাধ্যমের খবরে চীনের ৪০ জনের বেশি সৈন্য নিহত হয়েছিলেন বলে জানানো হয়। এই সংঘর্ষের পর উভয়পক্ষ মরুভূমি অঞ্চলে তাদের সৈন্য, অস্ত্র এবং সামরিক অন্যান্য রসদ বৃদ্ধি করেছিল।
পরে সামরিক কমান্ডার পর্যায়ে দফায় দফায় বৈঠকের পর ভারতীয় ও চীনা সৈন্যদের হিমালয়-সংলগ্ন লাদাখের বিতর্কিত প্যাংগং লেক এলাকা থেকে প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।
ভারতের সরকারি সূত্রের বরাত দিয়ে এনডিটিভি বলছে, গত শুক্রবার চীনা সৈন্যরা তাওয়াং সেক্টরের প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখায় অবস্থান নেন। এ সময় ভারতীয় সৈন্যরাও সেখানে টহল শুরু করলে উভয়পক্ষের মাঝে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে বলে ভারতীয় ওই সূত্র জানিয়েছে। পরে ওই এলাকায় দায়িত্বপ্রাপ্ত ভারতীয় সেনাবাহিনীর কমান্ডার চীনের সামরিক বাহিনীর সংশ্লিষ্ট কমান্ডারের সাথে পতাকা বৈঠক করে শান্তি ফিরিয়ে আনেন।
ভারত এবং চীনের মাঝে প্রায় ৩ হাজার ৮০০ কিলোমিটার সীমান্ত রয়েছে। যেখানে উভয় দেশের সৈন্যরা প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলএসি) নামে পরিচিত ডি ফ্যাক্টো সীমান্তে যেকোনও ধরনের আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার এড়াতে দীর্ঘদিনের প্রোটোকল মেনে চলেন। কিন্তু বিতর্কিত এই সীমান্ত এলাকায় চীন-ভারতের সৈন্যরা প্রায়ই সংঘাতে জড়িয়ে পড়েন। [সূত্র: এনডিটিভি, রয়টার্স]