অভাবের সঙ্গে বড় হয়েছেন তিনি। স্বপ্ন ছিল নতুন কিছু করার। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর নিজেকে মেলে ধরেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্য দশটা শিক্ষার্থীর মতো বিসিএস ক্যাডার হওয়ার গতানুগতিক স্বপ্নে হাবুডুবু খাওয়ার ছেলে তিনি ছিলেন না। তার প্রমান তিনি রেখেছেন।
পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রত্যন্ত এলাকায় বেড়ে উঠা সেই ছেলেটি এখন ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হয়েছেন। তিনি এখন এমন পলিমারিক ম্যাটেরিয়াল উদ্ভাবন করার চেষ্টা করেছেন, যেগুলো সহজে রিসাইকেল (recycle) করা যায় এবং সেলফ হিলিং Macromolecules, Macro Letters, Angewandte Chemie, Polymer Chemistry নামক স্বনামধন্য জার্নালে প্রকাশিত হয়েছে।
প্রজ্ঞাতেজ চাকমাকে হাই রিসার্চ এক্টিভিটির জন্য ডিপার্টমেন্ট থেকে Dissertation Scholar পুরস্কার দেয়া হয়। যা তার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
ড. প্রজ্ঞাতেজ চাকমা বলেন, ঢাবিতে ভর্তি হয়ে থার্ড ইয়ারের দিকে অনেক সিনিয়রকে দেশের বাইরে পিএইচডি নিতে দেখে তিনি অনুপ্রাণিত হন। এছাড়াও আমাদের পাহাড়ি সমাজের কৃতি সন্তান আমেরিকান প্রবাসী ড. মংসানু মারমাও আমার কাছে অনুপ্রেরণার ছিলেন।
তিনি আরও বলেন আর্থিকভাবে আমাদের পরিবার কখনো সচ্ছল ছিলো না। আমিও হয়তো ঢাবি থেকে অনার্স-মাস্টার্স করে বিসিএস অথবা সরকারি চাকরির জন্য প্রস্তুতি নিতে পারতাম। কিন্তু আমি সংকল্প নেই আমাকে যেকোন উপায়ে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করে একজন বিজ্ঞানী হতে হবে। আমার পরিবারের নাম, আমার সমাজের নাম উজ্জ্বল করতে হবে। তিনি বলেন, আর্থিক অসচ্ছলতার মাঝেও আমার পরিবার যতটুকু সম্ভব আমাকে সাপোর্ট দিয়েছে।
ড. প্রজ্ঞাতেজ চাকমা বলেন, আমি আমার এই পিএইচডি ডিগ্রি আমার প্রাণপ্রিয় মাকে উৎসর্গ করতে চাই, যিনি ছোটবেলা থেকে নিজের সবকিছু দিয়ে আমাদের তিন ভাই-বোনকে আগলে রেখেছেন। শত কষ্ট সহ্য করে আমাদের মানুষ করেছেন। মায়ের ত্যাগ ছাড়া এতদূর আসা কখনো সম্ভব ছিলো না।