গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি ও বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর মো. আবদুল হামিদ বলেছেন, কিছু অসাধু লোকের কারণে গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
শনিবার (১৯ নভেম্বর) ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ৫৩তম সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে তিনি এ কথা বলেন।
রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ বলেন, ইদানীং কিছু কিছু শিক্ষকদের কর্মকাণ্ডে সমাজে অন্য শিক্ষকদের সম্মানের জায়গাটা সংকুচিত হয়ে আসছে। কিছু সংখ্যক অসাধু লোকের কারণে গোটা শিক্ষক সমাজের মর্যাদা যেন ক্ষুণ্ন না হয় সেদিকে আপনারা অবশ্যয় খেয়াল রাখবেন।
তিনি বলেন, একজন উপাচার্যের মূল দায়িত্ব হচ্ছে বিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং একাডেমিক কার্যক্রমের তত্ত্বাবধায়ন, পরিচালন, মূল্যায়ন ও উন্নয়নকে ঘিরে। কিন্তু ইদানীং পত্রিকা খুললে মনে হয়, পরিবার পরিজন, ও অনুগতদের চাকরি দেওয়া ও বিভিন্ন উপায়ে প্রশাসনিক ও আর্থিক সুযোগ-সুবিধা নেওয়া যেন কিছু উপাচার্যের মূল দায়িত্ব। আবার অনেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিটাকে ঐচ্ছিক মনে করেন। বৈকালিক বা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস নেওয়াকে তারা অগ্রাধিকার দেন। বিশ্ববিদ্যালয় পরিবেশের সঙ্গে এটা খুবই বেমানান।
তিনি আরো বলেন, শিক্ষক হিসেবে নিজ পেশার প্রতি দায়িত্বশীল থাকবেন, এটাই প্রত্যাশা। শিক্ষকরা হয়ে উঠুন সমাজে মর্যাদার প্রতীক। শিক্ষকসহ যেকোনো নিয়োগের ক্ষেত্রে মেধাকে প্রাধান্য দিতে হবে। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় হলো একটি গবেষণাগার। বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রগুলো জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং গবেষণা মাধ্যমে সাফল্য অর্জন করেছে। যুগের সঙ্গে, আধুনিকতার সঙ্গে ও প্রযুক্তির ছোঁয়ায় আমাদের জীবনযাত্রা গতিশীল হলেও দুঃখের বিষয় হলো গবেষণায় আমরা অনেক পিছিয়ে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শুধু উচ্চ শিক্ষার একটি প্রতিষ্ঠান নয় এটি আমাদের নেতৃত্বের প্রতীক। আমাদের পথপ্রদর্শক। ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা সংগ্রাম, মুক্তিযুদ্ধসহ বাঙালির প্রতিটি আন্দোলন-সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে গৌরবময় ভূমিকা।
এর আগে বেলা ১১টা ৫৫ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্জন হল প্রাঙ্গণ থেকে সমাবর্তনের শোভাযাত্রা শুরু হয়। এরপর ১২টায় কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শুরু হয় সমাবর্তনের মূল আনুষ্ঠানিকতা। সমাবর্তন অনুষ্ঠানের উদ্বোধন ঘোষণা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চ্যান্সেলর ও রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন সমাবর্তন বক্তা নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. জঁ তিরোল। সমাবর্তনে তাঁকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লজ ডিগ্রি প্রদান করা হয়।
৫৩তম সমাবর্তনে ৩০ হাজার ৩৪৮ জন গ্র্যাজুয়েট ও গবেষক অংশ নিয়েছেন। অনুষ্ঠানে ১৩১ জন কৃতী শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীকে ১৫৩টি স্বর্ণপদক, ৯৭ জনকে পিএইচডি, ২ জনকে ডিবিএ এবং ৩৫ জনকে এম ফিল ডিগ্রি প্রদান করা হয়। অধিভুক্ত সাত কলেজের রেজিস্ট্রেশন করা গ্রাজুয়েটরা ডিজিটাল প্রযুক্তির মাধ্যমে ঢাকা কলেজ ও ইডেন মহিলা কলেজ ভেন্যু থেকে সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করছেন।