The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
মঙ্গলবার, ৮ই অক্টোবর, ২০২৪

৬ মাসেও শুরু হয়নি কাজ, জানেন না প্রকল্প পরিচালক

জবি প্রতিনিধি: ঢাকার কেরানীগঞ্জের তেঘোরিয়া ইউনিয়নে ২০০ একর জায়গাজুড়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজ চলছে কচ্ছপ গতিতে। দফায় দফায় প্রাথমিক ধাপের কাজের মেয়াদ তিন দফা বাড়ানো হলেও কাজে নেই কোনো অগ্রগতি। প্রকল্পের প্রাথমিক ধাপের কাজগুলোর মধ্যে অন্যতম পুকুর ও পুকুরের ঘাট নির্মাণ কাজের টেন্ডার পাস এবং ওয়ার্ক অর্ডার সম্পন্নের ছয় মাস পেরিয়ে গেলেও এখনও কাজই শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করা নিয়ে দেখা দিয়েছে সংশয়। এদিকে প্রকল্পের কাজ শুরু নিয়ে কোনো তাগাদা নেই কর্তৃপক্ষেরও। কাজের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেই জানেন না খোদ নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের পরিচালকও।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরের মার্চে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসে দুইটি পুকুরের জন্য তিনটি দৃষ্টিনন্দন ঘাট নির্মাণের জন্য টেন্ডার আহবান করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এপ্রিলে আবেদনকৃত টেন্ডারগুলো যাচাই-বাছাই করা হয়। ৩১ মে এই প্রকল্পের টেন্ডার পাস হয়। এই টেন্ডার পায় ‘আর এন এন্টারপ্রাইজ’ নামের এক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। ৩ কোটি ২৮ লাখ টাকা মূল্যের এই ঘাট নির্মাণ প্রকল্পে এই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সাথে চুক্তিও করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। একই সময়ে দেওয়া হয় ওয়ার্ক অর্ডারও। ১৫ জুন থেকে শুরু হওয়া ছয় মাস মেয়াদী এই প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ডিসেম্বর। সেই হিসেবে প্রকল্পের কাজ সম্পন্নের সময় আছে এক মাসেরও কম সময়। তবে এখনও কাজই শুরু করেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আর এন এন্টারপ্রাইজ।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশল দপ্তরের তথ্যমতে, এই প্রকল্পের আওতায় নতুন ক্যাম্পাসে একটি ছোট এবং একটি বড় আকারের দুইটি পুকুরের জন্য মোট ৩ টি দৃষ্টিনন্দন ঘাট নির্মাণ করা হবে। ছোট পুকুরটির জন্য দুই পাশে নির্মাণ করা হবে হবে দুইটি ঘাট। বড় পুকুরটির জন্য দৃষ্টিনন্দন ডিজাইনের একটি ঘাট নির্মাণ করা হবে। দৃষ্টিনন্দন এসব আধুনিক পুকুর ঘাট আধুনিক স্থাপত্য ধারায় নির্মাণ করা হবে।

প্রকৌশল দপ্তরের বিভিন্ন সূত্র বলছে, ঘাট নির্মাণ প্রকল্পের মেয়াদ আছে এক মাসেরও কম সময়। আর মূল ক্যাম্পাস প্রকল্পের প্রাথমিক পর্যায়ের কাজ শেষ করতে হাতে আছে মাত্র ৭ মাস সময়। আগামী জুনে তৃতীয় দফায় বাড়ানো মেয়াদ শেষ হতে চললেও প্রাথমিক ধাপের কাজের অনেকটাই এখনো বাকি। এখনও কাজ শুরু না করায় বাড়তি সময়েও আধুনিক ডিজাইনের এতগুলো ঘাট নির্মাণের কাজ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। দ্রুত টেন্ডার প্রক্রিয়া শেষ করার পরও ওয়ার্ক অর্ডারের ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও এখনো কাজ শুরু না হওয়ায় নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবেনা বলে জানিয়েছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।

আগামী জুনের আগে প্রাথমিক প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করতে না পারলে পরবর্তী অর্থবছরে প্রকল্পের মেয়াদ বাড়ানোর ভোগান্তিতে পড়া সহ অর্থ ছাড়ের ঝামেলায় পড়তে পারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। কাজের এমন স্থবিরতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের নতুন ক্যাম্পাসের নির্মাণকাজ কবে শেষ হবে তা নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এই ধীরগতির ফলে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নতুন ক্যাম্পাসের স্বপ্ন আরো দীর্ঘায়িত হচ্ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নতুন ক্যাম্পাসের ভূমি উন্নয়ন ও মাটি ভরাট প্রকল্পসহ বেশ কয়েকটি টেন্ডার বাগিয়ে নিতেই ঘাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরু করতে দেরী করছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে মদদ দিয়েছেন নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্প সংশ্লিষ্ট বেশ কয়েকজন কর্মকর্তাও। পছন্দের এই প্রতিষ্ঠানকে বাকি টেন্ডারগুলো পাইয়ে দিতে এই প্রকল্পের কাজে কোনো তাগাদা দেয়া হচ্ছেনা বলেও অভিযোগ রয়েছে।

এদিকে ওয়ার্ক অর্ডারের পরও ঘাট নির্মাণ প্রকল্পের কাজ শুরুতে এতো দীর্ঘসূত্রিতার কোনো কারণ জানাতে পারেননি প্রকল্প সংশ্লিষ্ট শীর্ষ কর্মকর্তারা। এমনকি প্রকল্পের সর্বশেষ অবস্থা সম্পর্কেও কিছু জানেন না খোদ নতুন ক্যাম্পাস প্রকল্পের পরিচালকও। ঠিক কি কারণে কাজ শুরুতে দেরী হচ্ছে এবং কবে নাগাদ কাজ শুরু হতে পারে তা সম্পর্কেও কোনো তথ্য জানেন না তিনি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় নতুন ক্যাম্পাস স্থাপন প্রকল্পের পরিচালক সৈয়দ আলী আহমেদ বলেন, এসব প্রকল্প সম্পর্কে আমি কিছু জানিনা। আমি প্রকল্প পরিচালক পদে নতুন জয়েন করেছি। কেন দেরী হচ্ছে বা কবে শুরু হবে সেটা ইঞ্জিনিয়ারিং দপ্তর বলতে পারবে।

আপনি একই প্রকল্পে উপ-পরিচালক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করছেন তারপরও কেন প্রকল্প সম্পর্কে জানেন না এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি এবিষয়ে কিছু বলতে চাইনা। যিনি আগের পরিচালক ছিলেন তিনি বলতে পারবেন দেরীর কারণ।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী হেলাল উদ্দিন পাটোয়ারী বলেন, ঘাট নির্মাণের কাজ প্রক্রিয়াধীন। দ্রুতই ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করবে। আমরা নির্ধারিত সময়ের আগেই কাজ শুরু করতে পারবো বলে আশা করছি। একটু হয়তো বেশি সময় লাগতে পারে। তবে সেটাতে কোনো সমস্যা হওয়ার কথা নয়।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.