The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ৬ই ডিসেম্বর, ২০২৪

হাইকোর্টে যেতে পুলিশি বাধা, দোয়েল চত্বরে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অবস্থান

ছাত্র-জনতার ওপর গণহত্যা, গণগ্রেফতার, হামলা, মামলা, গুম ও খুনের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ‘মার্চ ফর জাস্টিস’ কর্মসূচি চলছে সারা দেশে। বুধবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে ঢাবিসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা জড়ো হয়ে হাইকোর্টের দিকে মিছিল নিয়ে যাত্রা শুরু করেন।

শিশু একাডেমির সামনে গেলে পুলিশ তাদের বাধা দেয়। পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে কয়েকজন শিক্ষার্থীকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে অভিযোগ করেন বিক্ষোভকারীরা। পুলিশের বাধার পর মিছিল নিয়ে দোয়েল চত্বরে অবস্থান নিয়েছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ (ঢাবি) বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। পরে তাদের সঙ্গে এসে যোগ দেন ঢাবির সাদা দলের শিক্ষকরা।

দুপুর আড়াইটায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তারা সেখানে দোয়েল চত্বরে অবস্থান করছেন।

প্রসঙ্গত আজকের কর্মসূচির বিষয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক আব্দুল হান্নান মাসুদ গতকাল রাতে জানান, বুধবার দুপুর ১২টায় দেশের সব আদালত চত্বর, ক্যাম্পাসে ও রাজপথে এ পদযাত্রা কর্মসূচি পালন করা হবে।

৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে এ কর্মসূচি পালন করা হচ্ছে দেশের সব আদালত, ক্যাম্পাস এবং রাজপথে।

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের ঘোষিত ৯ দফা হলো:

১। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে জাতির কাছে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে।

২। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ও দলীয় ক্যাডার এবং সন্ত্রাসী কর্তৃক ছাত্র-নাগরিক হত্যার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল, আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে মন্ত্রিপরিষদ থেকে পদত্যাগ করতে হবে। ইন্টারনেট শাটডাউন করে দেশে ডিজিটাল ক্র্যাকডাউন করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলককে পদত্যাগ করতে হবে। আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় শহিদ শিক্ষার্থী এবং আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদেরকে ড্রাগ অ্যাডিক্ট বলে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা বক্তব্য দিয়ে এবং আন্দোলনকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করায় তথ্য প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ এ আরাফাতকে পদত্যাগ করতে হবে।

৩। ঢাকাসহ যত জায়গায় ছাত্র-নাগরিক শহিদ হয়েছে সেখানকার ডিআইজি, পুলিশ কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের চাকরি থেকে বরখাস্ত করতে হবে।

৪। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যেখানে ক্যাম্পাসে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী কর্তৃক শান্তিপূর্ণ আন্দোলনে হামলা হয়েছে, প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি ও প্রক্টরদের পদত্যাগ করতে হবে।

৫। যে পুলিশ-বিজিবি-র‍্যাব ও সেনা সদস্যরা শিক্ষার্থীদের ওপর গুলি করেছে, ছাত্রলীগ-যুবলীগসহ যেসব সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের ওপর নৃশংস হামলা চালিয়েছে এবং যেসব নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ ও সেনা কর্মকর্তাদের নিরস্ত্র ছাত্র-নাগরিকদের ওপর গুলি করার নির্দেশ দিয়েছে তাদের আটক করে হত্যা মামলা দায়ের করতে হবে ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করতে হবে।

৬। দেশব্যাপী যেসব ছাত্র-নাগরিক শহিদ এবং আহত হয়েছে তাদের পরিবারকে অতিদ্রুত সময়ের মধ্যে যথাযথ ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৭। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের প্রত্যেকটি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রলীগসহ সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে জড়িত দলীয় লেজুড়বৃত্তিক ছাত্র সংগঠনের রাজনীতি নিষিদ্ধ করে দ্রুততম সময়ে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ছাত্র সংসদ কার্যকর করতে হবে।

৮। অবিলম্বে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও হল খুলে দিতে হবে। কারফিউ তুলে নিয়ে সারাদেশের সমস্ত ক্যাম্পাসে মোতায়েন করা পুলিশ, র‍্যাব, বিজিবি, সোয়াট এবং আর্মি তুলে নিতে হবে।

৯। বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সঙ্গে সম্পৃক্ত শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমিক ও প্রশাসনিক কোনো ধরনের হয়রানি করা হবে না এই মর্মে অঙ্গীকার করতে হবে। ইতোমধ্যে গণগ্রেফতার ও পুলিশি হয়রানির শিকার সমন্বয়ক ও ছাত্র-নাগরিকদের অবিলম্বে মুক্তি দিতে হবে ও সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.