The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

স্কুলছুট আসিফ এখন কোটি টাকার প্রযুক্তি সংস্থার মালিক

আর্থিক দুরাবস্থা তাকে স্কুল ছাড়তে বাধ্য করেছিল। কিন্তু স্বপ্ন দেখা ছাড়াতে পারেনি। স্বপ্ন পূরণের আকাঙ্ক্ষায় পাড়ি দিয়েছিলেন ভারতশাসিত কাশ্মির থেকে ব্রিটেনে। স্বপ্নের ইমারত বানিয়ে হলেন কোটিপতি। স্কুলছুট সেই ছেলেই আজ ব্রিটেনের একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থার মালিক। তার অধীনে কাজ করেন বহু উচ্চশিক্ষিত কর্মী।

ভারতের জম্মু-কাশ্মিরের বাতামালু অঞ্চলে জন্ম শেখ আসিফের। পরিবারে একমাত্র উপার্জনাক্ষম ব্যক্তি ছিলেন তার বাবা। জম্মু-কাশ্মির পুলিশে কর্মরত ছিলেন তিনি। কিন্তু একার উপার্জনে সংসারের হাল ধরে রাখা আর সম্ভব হচ্ছিল না তার পক্ষে। আর তাই একপর্যায়ে বাবাকে সাহায্য করার জন্যই মাঝপথে পড়া থামিয়ে উপার্জন করতে শুরু করেছিলেন আসিফ।

তখন অষ্টম শ্রেণিতে পড়তেন তিনি। চার ভাইবোনের মধ্যে আসিফই ছিলেন বড়। দায়িত্ব পালনের ভার তার কাঁধে এসেই পড়েছিল প্রথম। বরাবরই আসিফের ইচ্ছা ছিল তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে পড়াশোনা করার। কিন্তু অভাব-অনটনের কারণে সেটি আর হয়ে ওঠেনি। তবে স্কুল ছাড়ার পর একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাতেই তিনি কাজে যোগ দিয়েছিলেন। টুকটাক কাজ শিখেছিলেন সেখানেই।

ছ’বছর সেখানেই কাজ করেন। তারপর ২০১৫ সালে নিজের একটি সংস্থা গড়ে তুলতে যান তিনি। কিন্তু অর্থের অভাবে সে সময় তা হয়ে ওঠেনি। ২০১৬ সালে অন্য একটি সংস্থায় কাজের সুযোগ পান আসিফ। সেই সংস্থায় গ্রাফিক ডিজাইনার হিসাবে যোগ দিয়েছিলেন। পরবর্তী ছ’মাস সেখানে কাজ শেখেন। ওই সংস্থা পরে বন্ধ হয়ে যায়। আসিফকে নতুন কোনো কাজ খুঁজে নিতে বলা হয়।

দিনরাত নতুন চাকরির সন্ধান শুরু করেন তিনি। ওই বছরই লন্ডনে এক ব্যক্তি তাকে ডেকে পাঠান। তিনি গুগল-এ কর্মরত ছিলেন। তিনিই আসিফকে নিজের একটি অফিস গড়ে তোলার পরামর্শ দেন। খুব কম খরচে কী ভাবে আসিফ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা গড়ে তুলতে পারবেন সেটিও জানিয়ে দেন তিনি।

এর মাত্র তিন মাসের মধ্যেই ব্রিটেনে ওই ব্যক্তির সঙ্গে যৌথ ভাবে ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তার সংস্থা ওয়েব ডিজাইনিং, ওয়েব ডেভেলপমেন্ট, গ্রাফিক ডিজাইনিং, অ্যাপ ডেভেলপমেন্ট, সফটওয়্যার ডেভেলপমেন্ট এবং ডিজিটাল মার্কেটিং নিয়ে কাজ শুরু করে। সময়ের সঙ্গে লন্ডনের অন্যতম বড় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় পরিণত হয় তার প্রতিষ্ঠান। ম্যানচেস্টারেও বড় অফিস রয়েছে।

আসিফের বেশির ভাগ সময় এখন লন্ডনেই কাটে। তবে জন্মভূমিকে ভুলে যাননি তিনি। নিজের ব্যবসা দাঁড় করানোর পরই তাই ২০১৮ সালে তিনি কাশ্মিরে ফিরে আসেন। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি নিয়ে এগিয়ে চলার অনুপ্রেরণা জুগিয়ে চলছেন সেই দিন থেকেই। বিনামূল্যে পরামর্শও দেন তিনি।

অন্তত ৮০০ ছাত্রছাত্রীকে প্রশিক্ষণ দিয়ে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছেন আসিফ। তার ছাত্রছাত্রীরা আজ কেউ তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থায় কর্মরত, কেউ নিজের সংস্থা গড়ে তুলেছেন।

স্কুল ছেড়ে যখন কাজে যোগ দিয়েছিলেন আসিফ বেতন পেতেন দেড় হাজার টাকা। আজ তিনি কোটি কোটি টাকার সংস্থার মালিক। [সূত্র: আনন্দবাজার]

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.