The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

লালমাটির ক্যাম্পাস কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লালমাই পাহাড়ের কোলে, প্রকৃতির মায়ায় ঘেরা কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস।

লালমাটির ক্যাম্পাস বলে খ্যাত দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের অঞ্চলের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীট কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের ২৬তম পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হিসাবে ২০০৬ সালের ২৮ মে লালমাটির পাহাড় আর সমতল ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হয় ঐতিহ্যবাহী বিশ্ববিদ্যালয়টি।

কুমিল্লা শহর থেকে ১০ কিলোমিটার অদূরে দক্ষিণ-পশ্চিমে সালমানপুর গ্রামে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান। ৫০ একর আয়তনের এ ক্যাম্পাসের বেশির ভাগজুড়েই টিলা। মূল ক্যাম্পাসের অদূরে নতুন করে একই মৌজায় আরও ২০০ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। সেখানেও সবুজে ঘেরা উঁচু উঁচু টিলা। আগামীতে এসব জায়গায় নানা ধরনের স্থাপনা গড়ার পরিকল্পনা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এরই প্রেক্ষৃতে সরকার ১ হাজার ৬৫৫ কোটি ৫৫ লাখ টাকার প্রকল্প অনুমোদনও দিয়েছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর ২৪ ইঞ্জিনিয়ার কনস্ট্রাকশন ব্রিগেড এই কাজ করবে।প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে চোখজুড়ানো এক জ্ঞানচর্চার কেন্দ্র হবে এই ক্যাম্পাস। তখন নিশ্চয়ই পর্যটকদের ভিড় বাড়বে আরও।

২০০৭ সালের ২৮ মে প্রথম ব্যাচের ৭ বিভাগে মোট ৩০০ শিক্ষার্থী ও ১৫ শিক্ষক নিয়ে যাত্রা শুরু করে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্তমানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ৬টি অনুষদের ১৯টি বিভাগে আছেন ৭ হাজার ৫৫ জন শিক্ষার্থী ও ২২৫ শিক্ষক।বর্তমানে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫ টি আবাসিক হল রয়েছে। ছাত্রদের জন্য ৩ টি, ছাত্রীদের জন্য রয়েছে ২টি হল। এছাড়াও শিক্ষকদের জন্য রয়েছে ডরমেটরি। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ৪টি একাডেমিক ভবনের পাশাপাশি রয়েছে ১টি দৃষ্টিনন্দন প্রশাসনিক ভবন।

ছাত্রছাত্রীদের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ৮ টি নীল বাস এবং বিআরটিসির ১২ টি ভাড়া বাসসহ সর্বমোট ২০ টি বাসের ব্যবস্থা রয়েছে।এছাড়াও শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের জন্য রয়েছে যাতায়াতের সুব্যবস্থা।বিশ্ববিদ্যালয়ের হাসপাতালে রয়েছে জরুরী প্রয়োজনে ২ টি এম্বুলেন্স। বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে একটি সুসজ্জিত লাইব্রেরি। লাইব্রেরিতে রয়েছে প্রায় ২০ হাজারেরও বেশি বই।

কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে অনেক দৃষ্টিনন্দন স্থাপনা। উল্লেখযোগ্য স্থানগুলো হলো CSE চত্বর,বঙ্গবন্ধু ভাস্কর্য,ফরেস্ট অব আর্ডেন,লালন চত্বর,বাবুই চত্বর, পিএ চত্বর, কাঠাল তলা,বৈশাখী চত্বর,প্রেম সেতু,ক্যাফেটেরিয়া,শহীদ মিনার,মুক্ত মঞ্চ প্রভৃতি। যা ক্যাম্পাসকে রাঙ্গিয়ে তুলেছে। মূলত একেকটি স্থাপনা ক্যাম্পাসকে ভিন্ন ভিন্নভাবে প্রতিনিধিত্ব করে। শিক্ষার্থীদের পদচারণে এ সকল স্থান উৎসবমূখর হয়ে উঠে। এ সব স্থান শিক্ষার্থীদের মিলনায়তন হিসেবেও পরিচিত।

প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়। কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়কে ঘিরে রয়েছে নানা ধরনের ফল,ফুল ও ঔষধি গাছ। তারমধ্যে উল্লেখযোগ্য বৃক্ষগুলো হলো কাঁঠাল,তাল খেজুর,আম, কৃষ্ণচূড়া ফুল ,কাশফুল, জেসমিন ফুল ,জারুল, দাঁতরাঙ্গা, পাম, ইউক্যালিপটাস ও ইসকলোনিয়া নামক বৈদেশিক বৃক্ষসহ আরো হরেকরকমের গাছ। এ সব বৃক্ষগুলো যেমন ক্যাম্পাসের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে তেমনি পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষাতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে যাচ্ছে।

অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে তাল মিলিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ও।বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন রকম দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সংগঠনের সংস্পর্শে এসে শিক্ষার্থীরা কো-কারিকুলাম এক্টিভিটিসে দক্ষ হয়ে উঠছে। এ সব সংগঠনের অনুপ্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীরা উচ্চ শিক্ষায় জন্য পাড়ি জমাচ্ছে বিদেশে। উল্লেখযোগ্য কয়েকটি সংগঠন হলো ডিবেটিং সোসাইটি,থিয়েটার,বিএনসিসি,রোভার স্কাউড,বৃত্ত কুবি,মডেল ইউনাইটেড নেশন,রক্তদান সংগঠন বন্ধু,ইএলডিসি,রোটার‍্যাক্ট ও লিও ক্লাবের মতো আন্তর্জাতিক মানের সংগঠন।

১৭ বছর আগের কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় আর এখনকার কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে আকাশপাতাল ব্যবধান হয়ে দাড়িয়েছে। পরিবর্তনের ছোঁয়া লেগেছে এই ক্যাম্পাসে। ধারাবাহিকভাবে এগোচ্ছে কুবি। শিক্ষার্থীরা আশাবাদী আগামীতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের প্রথম সারির বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর একটি হয়ে উঠবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.