The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ৭ই ডিসেম্বর, ২০২৪

রাতের ক্রিকেট বনাম বাংলার একতা

আলকামা রমিন, খুবি প্রতিনিধি : রাতের ক্রিকেট এখন আর নতুন কিছু নয়। ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি’র ওপর বাণিজ্যিক প্রভাবের মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় রাতের (ডে-নাইট ম্যাচ) ক্রিকেট ম্যাচ বাড়ছে, সেই সঙ্গে জনপ্রিয়তাও অর্জন করেছে এই ক্রিকেট।

টাকা আয়ের জন্য আইপিল এখন ক্রিকেটারদের কাছে তুমুল জনপ্রিয়। এরই পথ ধরে বাংলাদেশেও শুরু হচ্ছে বিপিএল। আর এসব ম্যাচ হচ্ছে রাতে।

টাকা কিংবা অর্থকড়ি ছাড়াও যে রাতের ক্রিকেট হচ্ছে। তা কিন্তু মোটেই আইপিএল কিংবা বিপিএলের মতো করে নয়। এখানে অর্থ আয়ের কোনো উদ্দেশ্যও নেই। শুধু নির্মল আনন্দের জন্যই রাতের ক্রিকেট জনপ্রিয় হয়েছে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের কাছে।

শুক্রবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখা গেল, বাংলা বিভাগের সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা ছয়টি দলে ভাগ হয়ে ক্রিকেট টুর্নামেন্ট খেলছে। খাজা হলের গোল চত্ত্বরে পাদদেশের সামনের জায়গার রাস্তাকে পিচ বানিয়ে চলছে এই খেলা। সুমন, আসাদ, আলিম ,সুকুমার, ফরহাদ, তাশরিক, রাসেল অর্নব, অয়ন, অলোকেশ,আবির, শেদরিল, সবুজ, শাহরিয়া, জয়দেব, সাকিব, শুভ,সবুজ, মামুন ও মেহেদীসহ ৩৫ থেকে ৪০ জন শিক্ষার্থী ছয় দলে ভাগ হয়ে খেলছে। এদের কেউ বাংলা বিভাগের সদ্য ভর্তি হওয়া নতুন ছাত্র আবার কেউবা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীবন শেষ করবেন।

৬ ওভার করে ৬ দলীয় টুর্নামেন্ট। রাতে এ খেলায় ব্যবহৃত হয় সাদা বল। ওরা টেনিস বলের ওপর সাদা টেপ পেঁচিয়ে বানিয়ে ফেলেছে সাদা ক্রিকেট বল। একপ্রান্ত থেকে বল করছে বোলার। অন্যপ্রান্তে ব্যাটসম্যানরা বিশ্ববিদ্যালয়ের উচুঁ উচুঁ খাম্বার ওপর লাগানো বাতির আলোয় অনায়াসে খুব সতর্কে চার আর রান নেওয়ার পাইতারি করছে। অনেকে আবার ছক্বা মেরে খাজা হলের উচু বিল্ডিং এ আঁচড়ে ফেলছে এবং সাথে সাথে আম্পেয়ার আঙ্গুল উঁচু করে আউট বলে ঘোষনা দিচ্ছেন। এভাবেই মধ্যরাতে তুমুল উত্তেজনার খেলায় মুখরিত খাজার গোল চত্ত্বর।

রাতের ক্রিকেট বনাম বাংলার একতা

খেলার ফাঁকে ওদের সঙ্গে কথা বলেছি। কয়েকজনের নামও জেনেছি। ও-ই বিভাগে সদ্য ভর্তি হওয়া মেহেদী কথা বলার ভিতর চোখ ছল ছল, ভয় ও জড়তা লক্ষনীয় কিন্তু এ লক্ষণ সিনিয়াদের ভয় কিংবা আদেশে নয়। তার কথা বলার অপরিপক্কতায় এ লক্ষণ গুলো দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন,আমি জানতাম রাতে সিনিয়ররা ডাকা মানে সেটা খুব ভীতিকর বিষয়। সিনিয়র জুনিয়র বন্ডিং , আনন্দ, উল্লাস, সুন্দর একটা সময় কাটানো, খেলায় কোন ভুল হলে সিনিয়াররা সঙ্গে সঙ্গে তা ধরিয়ে দিচ্ছেন যা খেলা কে আরো প্রাণবন্ত করছে। সবকিছু মিলাই আমার ধারণা আজ ভুল প্রমাণিত হলো।

উপরের সকল বর্ষের শিক্ষার্থীরা জানান, আপনারা যদি ভাবেন যে আমরা সময় নষ্ট করছি ! তাহলে এটা আপনার ভুল ধারণা। পড়ালেখার পাশাপাশি যেমন আনন্দ খেলাধুলা আত্মাবশ্যকীয় তেমনি ক্যাম্পাসে চলতে সিনিয়র জুনিয়র বন্ডিং টা খুবই প্রয়োজন। বিপদে আপদে যেন সবাই সবার পাশে থাকা পাশাপাশি নতুনদের সাথে পরিচিতি লাভের মাধ্যম হিসেবে আজকের ক্রিকেট টুর্নামেন্টটি অনেক গুরুত্ববহ।

কি এক অজানা স্বার্থে সবাই এক হওয়া আবার একে একে সবাই চলে যাওয়া।আসাদ,আলিম, সুমন, সুকুমার,তাশরীক,ফরহাদ,রাসেল,অর্নব পড়ালেখার অন্তিম পর্যায়ে কোন অপরাধে তাদের গুরুত্বপূর্ণ সময় নষ্ট করছেন। তারা চান সিনিয়র জুনিয়র সুন্দর একটা সম্পর্কের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ ক্যাম্পাস যেন আরো প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে। তারা শুধুই নির্মল আনন্দ এবং বাংলা পরিবারের সামনের দিনগুলো যেন আরো একনিষ্ঠ ও একতাবদ্ধ একটি ক্রিকেট টিম হিসাবে থাকতে পারে। সেজন্য ক্রিকেট ব্যাট ও টেপটেনিস নিয়ে খাজার গোলচত্ররে এসেছিল খেলতে।

উল্লেখ, বাংলা বিভাগের সকল বর্ষের শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায়, সদ্য শেষ করা প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থীরা এ ক্রিকেট টুর্নামেন্টের আয়োজন করেছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.