The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ২৬শে ডিসেম্বর, ২০২৪

ফাঁসিতে ঝুলে জাবি শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

জাবি প্রতিনিধিঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থী কাজী সামিতা আশকা আত্মহত্যা করেছেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের ৪র্থ বর্ষের (৪৮ ব্যাচ) শিক্ষার্থী। তার গ্রামের বাড়ি সাতক্ষীরার সদর উপজেলায়।

শুক্রবার (১ সেপ্টেম্বর) রাত সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পার্শ্ববর্তী আমবাগান এলাকা থেকে তাকে উদ্ধার করেন সহপাঠীরা। তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আশকার বন্ধুদের সাথে কথা বলে জানা যায়, আশকা আমবাগান এলাকায় ৫০ ব্যাচের চারজন জুনিয়রের সাথে বাসা ভাড়া করে থাকতেন। ঘটনার সময় তার রুমমেটরা কেউই বাসায় ছিলেন না৷ আশকার বন্ধু তুর্য খুলনা থেকে মোবাইল ফোনে জানালে ঘটনাস্থলে ছুটে যান রুমমেট ও সহপাঠীরা। ভেতর থেকে দরজা বন্ধ অবস্থায় রাত সাড়ে আটটায় কিছু আগে সিলিংয়ের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পান তারা। সহপাঠীরা তাকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেলে নিয়ে আসলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। প্রাথমিকভাবে বন্ধুর সাথে কোন ঝামেলার কারণে তিনি আত্মহত্যা কর‍তে পারেন বলে জানা গেছে।

আশকার রুমমেট শর্মী ও মাইশা জানান, আমরা আজকে কেউই বাসায় ছিলাম না। মাইশা সন্ধ্যার কিছু আগে বাসা থেকে বের হওয়ার সময় আশকাকে তার বন্ধু তূর্যর সাথে ভিডিও কলে ঝগড়া করতে দেখেন। পরে রাত সাড়ে আটটায় তূর্য আশকার বন্ধু সামিহাকে ফোন করে দ্রুত বাসায় যেতে বলে। বাসায় গিয়ে তারা তাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখতে পায়। তখন বাইরে থেকে দরজা ভেঙে তারা তাকে উদ্ধার করে প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসেন। পরে সেখান থেকে চিকিৎসকরা তাকে এনাম মেডিকেলে পাঠান।

আশকার বন্ধু খুলনার নর্থ ওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার জামান তূর্য মোবাইল ফোনে জানান, আশকার সাথে আমার তেমন ঝগড়া হয়নি৷ ওর সাথে ভিডিও কলে কথা বলছিলাম। পরে হঠাৎ করে কল কেটে যায়। পরে আর তাকে না পেয়ে আমি ওর বন্ধুদের বাসায় যেতে বলি।’

বন্ধু গিয়াস উদ্দিন মুন্না ও শাকিল জানান, আমরা রাত সাড়ে আটটায় খবর পাই যে আশকা সিলিংয়ের সাথে ঝুলে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছে। তাকে সে অবস্থা থেকে উদ্ধার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে আসি। পরে তারা সাভারের এনাম মেডিকেলে পাঠায়৷ হাসপাতালের ডাক্তার তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

আশকার আরেক বন্ধু মুজতাহিদ জানান, আশকা খুবই হাসিখুশি ও প্রাণবন্ত মেয়ে ছিল। তার সাথে তার বন্ধুদের কারো কখনো ঝামেলা হয়েছে বলে শুনিনি। পরিবারের সাথেও তার ভাল সম্পর্ক ছিল। তবে বন্ধুর সাথে ঝামেলায় সে আত্মহত্যা করতে পারে।

ইতিহাস বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক হোসনে আরা বলেন, আমাকে শিক্ষার্থীরা ফোন করে দ্রুত একটা এম্বুলেন্স জোগাড় করে দিতে বলে। কিন্তু তারা আমাকে সুইসাইডের কথা জানায়নি৷ পরে আমরা হাসপাতালে এসে জানতে পারি যে সে আত্মহত্যা করেছে।

এনাম মেডিকেলের দায়িত্বরত চিকিৎসক ডা. অর্ণব বলেন, আমাদের এখানে তাকে রাত সাড়ে নয়টায় নিয়ে আসা হয়। ইসিজি রিপোর্ট দেখে আমরা বুঝতে পারি অন্তত এর আধাঘন্টা পূর্বে তার মৃত্যু হয়েছে। এটা যেহেতু অস্বাভাবিক মৃত্যু, পুলিশ সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করার পর আমরা মৃতদেহ পরিবারকে বুঝিয়ে দিব।

সাভার থানার দায়িত্বরত উপ-পরিদর্শক আল মামুন কবির বলেন, প্রাথমিকভাবে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা বলে শনাক্ত করেছি। বন্ধুর সাথে ঝগড়ার কারণে সে আত্মহত্যা করতে পারে বলে জানতে পেরেছি। সাক্ষী এবং সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি শেষে আমরা পরিবারকে মৃতদেহ বুঝিয়ে দিতে পারব।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.