সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগে সব ধরনের কোটা বাতিলের দাবিতে এবার আন্দোলনে নামছেন চাকরিপ্রার্থীরা। এ দাবিতে ইতিমধ্যে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তাঁরা। ফেসবুকে গ্রুপ খুলে এ আন্দোলন কর্মসূচির ঘোষণা দেওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আগামী শুক্রবার (১৮ মার্চ) জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে এ কর্মসূচি পালন করা হবে। সকাল সাড়ে ১০টায় এটি আয়োজনের কথা বলা হয়েছে। অধিকার বঞ্চিত বেকারসমাজের ব্যনারে কর্মসূচি পালন করবেন চাকরিপ্রার্থীরা।
রুহুল আমিন নামে একজন লিখেছেন, ‘প্রতিবন্ধী কোটার বাইরে কোনো কোটা থাকতে পারে না। একজন শিক্ষকের বেতন যে কৃষকের করের টাকায় দেওয়া হয়, সেখানে পোষ্যকোটার মানে কি? বাংলাদেশে যেখানে সংসারের দায়িত্ব ছেলেদের উপরেই বর্তায়, সেখানে ৬০ শতাংশ নারী কোটা জুলুম। এভাবে সমাজে অসমতা বাড়ছে। সকল কোটা নিপাত যাক। মেধাবীরা মুক্তি পাক।’
আন্দোলনকারীরা জানিয়েছেন, জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কোটা বাতিল পরিপত্র অনুসারে প্রথম থেকে ১৩তম গ্রেড পর্যন্ত সব ধরনের কোটা বাতিল করা হয়েছে। কিন্তু প্রাথমিক সহকারী শিক্ষক পদটি ১৩তম গ্রেডে উন্নীত হওয়ার পরও শতভাগ কোটা বহাল রেখেছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। এটি কোটা বাতিল পরিপত্র এবং বাংলাদেশ সংবিধানের ২৮ নম্বর ধারার (প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিয়োগ লাভ সম্পর্কিত) পরিপন্থী।
তারা বলছেন, এখন নারী ৬০ শতাংশ, পুরুষ ২০ শতাংশ এবং পোষ্য ২০ শতাংশ কোটা রয়েছে। জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, ফিনল্যান্ডে শতভাগ স্বাক্ষরতার হার। এমনকি প্রতিবেশী দেশ ভারত, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপের শিক্ষার হার আমাদের থেকে বেশি। তারা কোটা নয়, মেধার ভিত্তিতে শিক্ষক নিয়োগ দেয়। কোটায় শিক্ষক নিয়োগ নয়, মেধাকে গুরত্ব দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ দিলে বিদ্যালয়গুলো মানসম্মত মেধাবী শিক্ষক পাবে।
মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী মাসে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা হতে পারে। জুলাইয়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়।
সহকারী শিক্ষকের ৩২ হাজার ৫৭৭টি শূন্যপদে নিয়োগের জন্য প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ২০২০ সালের ২০ অক্টোবর বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। কিন্তু করোনা মহামারির কোরণে নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। ইতিমধ্যে অবসরজনিত কারণে আরও দশ হাজারেরও বেশি সহকারী শিক্ষকের পদ শূন্য হয়েছে। এ কারণে বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষক ঘাটতি দেখা দিয়েছ; যা পাঠদান কার্যক্রমকে ব্যাহত করছে।
এর ফলে সমস্যা নিরসনে মন্ত্রণালয় আগের বিজ্ঞপ্তির শূন্যপদ ও বিজ্ঞপ্তির পরের শূন্যপদ মিলিয়ে প্রায় ৪৫ হাজার সহকারী শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।