The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

পুতিনের ঘোষণায় ইউক্রেনের ৪ অঞ্চল রাশিয়ার হচ্ছে আজ

সামরিক অভিযান শুরুর সাত মাসেরও বেশি সময় পর ইউক্রেনের চার অঞ্চলকে – খেরসন, জাপোরিঝিয়া, দোনেতস্ক ও লুহানস্ক – রাশিয়ায় যুক্ত করতে চলেছেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। শুক্রবার (৩০ সেপ্টেম্বর) এই চার ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার বলে ঘোষণা করবেন তিনি।

এ উপলক্ষে যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে পুতিন প্রশাসন। এতে করে সাত মাস ধরে চলে আসা এই যুদ্ধের তীব্রতা নতুন মাত্রায় পৌঁছাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। শুক্রবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘রাশিয়ান ফেডারেশনে নতুন অঞ্চলগুলোর প্রবেশ’ সংক্রান্ত একটি চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে শুক্রবার সভাপতিত্ব করবেন প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। তাড়াহুড়ো করে মঞ্চস্থ গণভোট শেষ হওয়ার তিন দিনের মাথায় ইউক্রেনীয় এই চার ভূখণ্ডকে আনুষ্ঠানিকভাবে রাশিয়ার বলে ঘোষণা করতে যাচ্ছেন তিনি। দখলকৃত এসব অঞ্চলে রাশিয়ায় যোগদানের পক্ষে ৯৯ শতাংশ পর্যন্ত ভোট পড়েছে বলে দাবি করা হয়েছে।

অবশ্য ইউক্রেন এবং পশ্চিমা সরকারগুলো এই ভোটকে জাল, অবৈধ এবং অস্ত্রের মুখে পরিচালিত বলে আখ্যায়িত করেছে। তবে মস্কো বলছে, মানুষ স্বাধীনভাবে তাদের ‘ঐতিহাসিক মাতৃভূমিতে’ ফিরে যাওয়ার পথ বেছে নিয়েছে। আট বছর আগে একইভাবে ক্রিমিয়া দখল করেছিল রাশিয়া।

রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার স্থানীয় সময় শুক্রবার বিকেল তিনটায় (বাংলাদেশ সময় সন্ধ্যা ৬টায়) গ্র্যান্ড ক্রেমলিন প্রাসাদের সেন্ট জর্জ হলে ‘রাশিয়ান ফেডারেশনে নতুন অঞ্চলগুলোর প্রবেশ’ সংক্রান্ত ওই চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিত হবে। কলামযুক্ত এই হলটির সোনায় খোদাই করা মার্বেল ফলক রাশিয়ান সামরিক বীরদের স্মরণ করে থাকে।

বৃহস্পতিবার প্রেস সেক্রেটারি ও মুখপাত্র দিমিত্রি পেসকভ মস্কোতে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, শুক্রবার মস্কোতে ইউক্রেনের চার অঞ্চলের নেতাদের সঙ্গে রাশিয়ায় যোগদান বিষয়ক চুক্তি স্বাক্ষর হবে। পাশপাশি সেখানে ভাষণও দেবেন প্রেসিডেন্ট পুতিন।

রাশিয়াজুড়ে সেই ভাষণ সম্প্রচারের যাবতীয় ব্যবস্থা ইতোমধ্যে নেওয়া হয়েছে। এছাড়া মস্কোসহ রাশিয়ার ছোট-বড় বিভিন্ন শহরে অসংখ্য বিলবোর্ডও স্থাপন করা হয়েছে। সেসব বিলবোর্ডে লেখা হয়েছে ‘দোনেতস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া, খেরসন— রাশিয়া।’

পুতিনের শুক্রবারের ভাষণে আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে রাশিয়ার অবস্থান ও লক্ষ্য সম্পর্কে স্পষ্ট দিকনির্দেশনা থাকবে বলে উল্লেখ করেছেন পেসকভ। এছাড়া এই চার অঞ্চলের যোগদান উপলক্ষে জাঁকজমকপূর্ণ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও কনসার্টের আয়োজন করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তিনি।

অবশ্য দোনেতস্ক, লুহানস্ক, জাপোরিঝিয়া এবং খেরসন অঞ্চলের রাশিয়ার সঙ্গে সংযুক্তি মস্কোর আনন্দের হলেও পুতিনের জন্য এটি বিপজ্জনক মুহূর্তে এসেছে। কয়েক মাস ধরে নাকাল, অমানবিক যুদ্ধের পর চলতি মাসে ইউক্রেন উত্তর-পূর্ব খারকিভ অঞ্চলে রুশ বাহিনীকে পিছু হটিয়ে এলাকাটি দখল করে নেয়।

মূলত পাল্টা হামলায় ইউক্রেনে দখল করা ভূখণ্ডগুলো হাতছাড়া হতেই সামরিক গতিবিধি বাড়ানের নির্দেশ দেন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন। সম্প্রতি দেশটিতে নতুন যে সামরিক ঘোষণা দেওয়া হয়েছে তাতে জানানো হয়েছিল, যাদের সামরিক অভিজ্ঞতা রয়েছে, তাদেরও যুদ্ধে ডাকা হবে। এই পরিস্থিতিতে তরুণ ও যুবক রুশ নাগরিকদের মধ্যে দেশ ছেড়ে পালানোর হিড়িক পড়ে যায়।

এছাড়া যেসব রুশ নাগরিককে যুদ্ধে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয় তাদের মধ্যে অনেকে রয়েছেন যাদের বয়স ৬০ বছরের ওপরে। কেউ আবার গুরুতর অসুস্থও। শিক্ষার্থীরাও রয়েছেন সেসব তালিকায়। এমনকি কট্টর ক্রেমলিন মিত্ররাও এই ঘটনার সমালোচনা করেছে এবং পুতিন নিজেই বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘রিজার্ভ সেনা তলবের ঘটনায় সকল ভুল সংশোধন করতে হবে’।

তবে যাই হোক ইউক্রেনের ওই চার ভূখণ্ড আপাতত রাশিয়ার হতে চলেছে। আর রাশিয়ার এই পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি শুক্রবার ইউক্রেনজুড়ে বিক্ষোভ মিছিলের ডাক দিয়েছেন বলে জানা গেছে। যুক্তরাজ্য, কানাডা, জার্মানি ও তুরস্ক সেই মিছিলে সমর্থনও দিয়েছে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.