মোস্তাক মোর্শেদ, ইবি: ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলে র্যাগিং এর নামে নির্যাতনের শিকার ছাত্রী ফুলপরীর পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেত্রী সানজিদা চৌধুরী অন্তরাসহ অভিযুক্ত আরো ৪ জন।
বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) বিকাল ৫ টার দিকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের একথা বলেন ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী।
জিজ্ঞাসাবাদ শেষে নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রী বলেন, ‘অভিযুক্ত সানজিদা চৌধুরী অন্তরা আমার হাত-পা ধরে ক্ষমা চেয়েছেন। বলেছেন, আমাকে মাফ করে দাও।’
প্রতিউত্তরে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী বলেছেন, কিছুদিন আগে আপনারা আমাকে র্যাগিং করলেন। এখন সবকিছু প্রশাসনের হাতে, আমার কিছুই করার নেই। ঘটনার সময়ও আমি আপনাদের কাছে মাফ চেয়েছি কিন্তু তখন আপনারা আমাকে নিয়ে ভাবেননি। আমি তদন্ত কমিটিকে অভিযুক্তদের চিনিয়ে দিয়েছি আমার ভিতর কোনো ভয় ছিলোনা। তবে তাদের মধ্যে কান্না কান্না ভাব ছিলো।
এর আগে দুপুর ১২টার দিকে ফুলপরী খাতুন তাঁর বাবা আতাউর রহমানের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে আসেন। ক্যাম্পাসে ফুলপরীর নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রক্টর জয়শ্রী সেন একটি গাড়িতে করে প্রধান ফটক থেকে তাঁকে হলে নিয়ে আসেন। পরবর্তীতে তদন্ত কমিটি তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। প্রায় ঘণ্টাখানেক জিজ্ঞাসাবাদের পর বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মোশাররফ হোসেন ভবনের আইন বিভাগে তাদের নিয়ে আসা হয়। পরে বিশ্ববিদ্যালয় তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মন্ডলের কক্ষে ভুক্তভোগী ফুলপরী ও অভিযুক্ত পাঁচ শিক্ষার্থী অন্তরা, তাবাসসুম, মাওয়াবিয়া, মীম, উর্মীকে মুখোমুখি করে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ শুরু হয়। সেখানে উপস্থিত ছিলেন তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যরাও।
এদিকে, দুপুর ১২টার দিকে ক্যাম্পাসে যায় হাইকোর্টের তদন্ত কমিটি। তারা প্রক্টর অফিসে প্রক্টর অধ্যাপক ড. শাহাদৎ হোসেন আজাদের সাথে দেখা করেন। দুপুর ১টার দিকে তারা ওই হলে যান। সেখানে হল কমিটি ও হাইকোর্টের নির্দশনায় গঠিত তদন্ত কমিটি ভুক্তভোগীকে জিজ্ঞাসাবাদ করেন। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকালের দিকে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নির্দেশিত তদন্ত কমিটির ডাকে তদন্ত কমিটির আহ্বায়কের কক্ষে যান।
মাফ চাওয়ার বিষয়টি স্বীকার করে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ সহ-সভাপতি সানজিদা চৌধুরী অন্তরা বলেন, হ্যা আমি তার কাছে দুঃখপ্রকাশ করেছি ওর সাথে যা হয়েছে তা খুব কষ্টদায়ক, বিষয়টি শুনে আমার খারাপ লেগেছিলো।
দেশরত্ন শেখ হাসিনা হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, আজকে আমাদের হল, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির সবাই কাজ করেছে। আপাতত তদন্ত কমিটি গুলোর জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়েছে। তবে রিপোর্ট কবে জমা দেয়া হবে সে বিষয়ে তিনি বলতে পারেননি
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. রেবা মণ্ডল বলেন, আমরা কাজ করে যাচ্ছি তবে এ ব্যাপারে তদন্তের স্বার্থে আমি কিছু বলতে চাচ্ছিনা। তদন্তের সুষ্ঠু কার্য পরিচালনার জন্য কোনো বিষয়ই বলার মতো রয়েছে বলে মনে করিনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর শাহাদৎ আজাদ বলেন, আমি আজকে বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিটির কাছে সাক্ষ্য দিয়েছি।