The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শনিবার, ৯ই নভেম্বর, ২০২৪

ছিলেন নাপিত, আজ তিনি ১৮ হাজার কোটি টাকার মালিক!

রমেশ বাবু। বিশ্বের সেরা ধনী নাপিত। প্রতিভা ও সঠিক সিদ্ধান্তের জোরে দরিদ্র থেকে সচ্ছল জীবন পেয়েছেন রমেশ। বর্তমানে দুই বিলিয়ন ইউএস ডলারের মালিক তিনি। যা বাংলাদেশি মুদ্রায় ১৮ হাজার কোটি টাকারও বেশি। তার রয়েছে ১২০টি বিলাসবহুল গাড়ি ও ৩৭৮ দামি গাড়ি। ভারতে ধনীদের তালিকায় তার অবস্থান ৬৮তম। চলুন সেই বিশ্বের সেরা ধনী নাপিত রমেশ বাবুর সাফল্যের গল্প আজ জানা যাক।

১৯৭৪ সালে ভারতের বেঙ্গালুরে এক সেলুন ব্যবসায়ীর ঘরে জন্মগ্রহণ করেন রমেশ বাবু। সাত বছর বয়সে বাবাকে হারিয়ে আর্থিক কষ্ট্রের মধ্যে পরেন ছোট্ট রমেশ। বয়স কম থাকায় বাবার সেলুন ব্যবসায় হাত ধরার সক্ষমতা ছিল না তার। বাবার সেলুনের দোকানটি মাসিক পাঁচ টাকায় এক চাচার কাছে ভাড়া দেন রমেশের মা। কিন্তু আর্থিক সংকট তাদের পিছু ছাড়ল না। এক পর্যায়ে বাধ্য হয়েই নন্দিনী নামের একজনের বাড়িতে কাজ শুরু করেন রমেশের মা।

দরিদ্র রমেশ ক্যারিয়ারের শুরুতে পত্রিকা ও দুধ বিক্রির মাধ্যমে প্রতি মাসে ১০০ রুপি আয় করতেন। পাশাপাশি চালিয়ে যান লেখাপড়াও। রমেশ যখন ইন্টারমিডিয়েট পর্যায়ে উঠেন, তখন চূড়ান্ত পরীক্ষায় অকৃতকার্য হন। তবে হাল ছাড়েননি রমেশ বাবু। ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারে ডিপ্লোমা করেন। মনে ছিল, বড় কিছু করে পরিবারের অভাব দূর করার। কিন্তু রমেশ ১৮ বছর বয়সেই বাবার সেলুন ব্যবসার দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নেন।

শিক্ষিত রমেশ অল্প সময়ে ভালো ব্যবহার ও তরুণদের হেয়ার স্টাইলিস্ট হিসেবে পরিণত হন। কাক ডাকা ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত কাজ করতেন রমেশ। টানা চার বছরের পরিশ্রমে কিছু টাকা জমিয়ে ১৯৯৩ সালে শখের বশে ব্যাংক লোনের মাধ্যমে মারুতি ওমনি নামের একটি মাইক্রোবাস কেনেন। যেখানেই তার সফলতার বীজ লুকিয়ে ছিল। রমেশ বাবু বলেন, নিজের ব্যবহারের জন্য মাইক্রোবাসটি কিনেছিলাম।

পাশাপাশি সেলুন ব্যবসাও পরিচালনা করতাম। কিন্তু ব্যাংক লোনের টাকা ঠিকমতো পরিশোধ করতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। এক পর্যায়ে দুই মাসের লোনের টাকা জমা পড়ে যায়। তখন নন্দিনী নামের ভদ্রমহিলা গাড়িটি ভাড়া দেয়ার পরামর্শ দেন। এতে রেন্ট-এ কারের ব্যবসার ধারণা আবিষ্কার করি। এরপর মাইক্রোবাসটি ভাড়া দেয়া শুরু করি। মাঝে মাঝে নিজেও যাত্রীদের সেবা দেই। সঙ্গে নিজের সেলুন ব্যবসাটিও চালু রাখি।

সেলুন ব্যবসার পরিচিতি থেকে রেন্ট-এ কারের ব্যবসা জমজমাট হয়। ধীরে ধীরে একের পর এক গাড়ি ব্যবসায় সংযুক্ত করি। আমার রেন্ট-এ কারের ব্যবসায় মি ব্যাক, লিমুজিন, বেন্ট্রি, মার্সিডিজ, বিএমডাব্লিউ-এর মতো গাড়ি রয়েছে। ২০১১ সালে রোল রয়েলস গাড়ি যুক্ত করি। বর্তমানে রেন্ট-এ কার কোম্পানি থেকে ৫০ হাজার রুপির বিনিময়ে একদিনের জন্য রোল রয়েলস ভাড়া দেই। বাকিগুলোর নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থে ভাড়া দিচ্ছি। এছাড়া ট্যুর অ্যান্ড ট্রাভেলসের ব্যবসা প্রতিষ্ঠা করি।

সফল এ ব্যবসায়ী বলেন, আমি এতো টাকার মালিক হওয়া সত্ত্বেও সেলুন ব্যবসা চালু রেখেছি। মাত্র ১৫০ রুপিতে এখনো আমার কাছে চুল কাটতে পারবেন। কিন্তু সব সময় হয়তো পাবেন না। কারণ, আমি শখের বশে চুল কাটছি। রমেশ বলেন, লক্ষ্য স্থির থাকলে জীবনে সাফল্য পাওয়া সহজ। স্থির লক্ষ্য করে কঠোর পরিশ্রম করলেই সাফল্য হাতের মুঠোয় চলে আসে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.