The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বৃহস্পতিবার, ১২ই ডিসেম্বর, ২০২৪

চবিতে নিয়োগের জন্য বিদায়ী উপাচার্যের পায়ে পড়লেন ছাত্রলীগ নেতা

নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক পিছু ছাড়ছে না চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের। এবার নিয়োগ দেওয়ার জন্য উপাচার্যের পা ধরলেন ছাত্রলীগ নেতা। পায়ে পড়ার সময় উপাচার্য ওই ছাত্রলীগ নেতাকে পুলিশে দেওয়ার হুমকি দেন।

সাবেক উপাচার্যের পায়ে পড়া ওই নেতা হচ্ছেন শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল। ক্যাম্পাসে মইনুল নিজেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দীনের অনুসারী হিসেবে পরিচয় দেন। উপাচার্যের পা ধরা নিয়ে ওই ছাত্রলীগ নেতার একটি ভিডিও ফুটেজ ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। ভিডিও ফুটেজটি গত ২০ মার্চ সকালের বলে জানা গেছে। চট্টগ্রাম শহরের কাজীর দেউড়ি লাইভলেন এলাকায় সদ্যবিদায়ী উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতারের নিজ বাসভবনের নিচে এ ঘটনা ঘটে।

মইনুল ইসলাম রাসেল পায়ে পড়লে এ সময় সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতারকে খুবই উত্তেজিত হয়ে কথা বলতে শোনা যায়। তিনি বলেন, ‘আমার চাকরি দেওয়ার ক্ষমতা নাই। আমার পা ছাড়। তিনি তার বাসার নিচ থেকে চলে যেতে বলেন এবং পুলিশ ডাকবেন বলে জানান। শিরীণ আখতার গাড়িতে উঠে গেলে মইনুল ইসলাম রাসেল তার গাড়ির সামনে এসে পথরোধ করেন। বারবার তার গাড়ির জানালা খুলতে অনুরোধ করেন।’

এদিকে ফেসবুকে ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে পড়ায় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা শুরু হয়েছে। ভিডিও ফুটেজটিতে দেখা যায়, লাইভলেন এলাকার বাসার নিচে ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা উপস্থিত হন। এ সময় সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. শিরীণ আখতার লিফটে করে বাসার নিচে নামলে লিফটের সামনে থাকা চবি ছাত্রলীগের কয়েকটি গ্রুপের নেতা উপাচার্যের পথ আটকে ধরেন। এ সময় ছাত্রলীগের সাবেক সহসভাপতি মইনুল ইসলাম রাসেল চাকরির জন্য উপাচার্য শিরীণ আখতারের পায়ে পড়েন। একই সময়ে আরেক সহসভাপতি মুজিবর রহমানও পায়ে পড়ে যান।

ওই সময় সেখানে চাকরিপ্রত্যাশী ছাত্রলীগের আরও কয়েকজন নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। এদের মধ্যে নীল রঙের গেঞ্জি পরিহিত ব্যক্তিটি ছাত্রলীগের ভিএক্স গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহসভাপতি রোমেল হোসেন এবং সাদা শার্ট পরিহিত ব্যক্তিটি একই গ্রুপের নেতা ও সাবেক সহসভাপতি মুজিবর রহমান।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২০ মার্চ শহরের কাজীর দেউড়ি লাইভলেন এলাকার বাসা থেকে সকালের দিকে সাবেক উপাচার্য শিরীণ আখতার নতুন উপাচার্য অধ্যাপক ড. আবু তাহেরকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আসছিলেন। আসার সময় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা চাকরির জন্য তার গাড়ির পথরোধ করে এবং খুবই অনুনয়-বিনয় করেন।

এর আগের দিন ১৯ মার্চ নিজের শেষ কর্মদিবসে দৈনিক মজুরির ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগ, হল ও দপ্তরে ৪০ জনের অধিক তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারী হিসেবে নিয়োগ দেন উপাচার্য।

ছাত্রলীগ নেতা মইনুল ইসলাম বলেন, গত বছরের ৩০ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৪১তম সিন্ডিকেট সভায় মেরিন সায়েন্স বিভাগে শিক্ষক নিয়োগকে কেন্দ্র করে আমার কিছু কর্মী উপাচার্যের বাসভবন ভাঙচুর ও শাটল ট্রেন অবরোধ করেন। এ ঘটনায় আমাকে প্রধান অভিযুক্ত করে তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

তিনি বলেন, আমি এর আগে অনেকবার ম্যামকে অনুরোধ করেছি, আমার ভুলের বিষয়টি স্বীকার করেছি। আমাকে ক্ষমা করে দিতে বলেছি। তদন্ত কমিটি থেকে নামটা বাদ দিয়ে দেন। কিন্তু ম্যাম আমার কথা শোনেননি। সর্বশেষ বুধবার (২০ মার্চ) ম্যামের পায়ে ধরে বলেছিলাম, আপনি মায়ের মতো আমাকে ক্ষমা করে দিন। কিন্তু ম্যাম শুনেনি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.