The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
শুক্রবার, ১৯শে এপ্রিল, ২০২৪

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের নির্দেশে পরীক্ষায় বসছেন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার কুয়েটে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফার্স্ট সেমিস্টার (পর্ব) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ২৪ মার্চ ওই পরীক্ষা শেষ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণবিষয়ক পরিচালক ইসমাঈল সাইফুল্যাহ বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তবে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অনলাইনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার থেকে কুয়েটে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা থাকায় সম্প্রতি বহিষ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদেরও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। শাস্তি পাওয়া যন্ত্রকৌশল বিভাগের তিনজনসহ বৃহস্পতিবার কেউ কেউ পরীক্ষা দিয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন ক্যাম্পাসের কাছের ভাড়া বাসায় মারা যান। অভিযোগ ওঠে মৃত্যুর দিন দুপুরে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গত ২৮ নভেম্বর প্রশাসনের কাছে ৯টি সুপারিশসহ ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় ওই কমিটি। এরপর গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে চারজনকে চিরতরে কুয়েট থেকে বহিষ্কার, সাতজনকে দুই শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার, একজনকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়। এর বাইরে ২২ জন শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়। তবে ওই ২২ জনের বহিষ্কার আদেশ আপাতত স্থগিত ছিল। এ ছাড়া ১০ জন ছাত্রকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি সাদমান নাহিয়ান ১২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে বহিষ্কারাদেশসহ সব ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে এক রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি শেষে তাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সাজা পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাছে চিঠি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা।

মো. আনিছুর রহমান ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার চিঠি পেয়ে আমরা সেই মোতাবেক তা বাস্তবায়ন করেছি। আইনি অন্য কোনো বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ১২ জনের সবারই কোনো না কোনো পরীক্ষা আছে। কেউ কেউ শুরুর দিন পরীক্ষা দিয়েছেন।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.

  1. প্রচ্ছদ
  2. ক্যাম্পাস
  3. খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের নির্দেশে পরীক্ষায় বসছেন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় আদালতের নির্দেশে পরীক্ষায় বসছেন বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ মো. সেলিম হোসেনের মৃত্যুর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কৃত শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছেন। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ পাচ্ছেন তাঁরা। আজ বৃহস্পতিবার কুয়েটে অনলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন বিভাগের ২০১৯-২০ শিক্ষাবর্ষের ফার্স্ট সেমিস্টার (পর্ব) পরীক্ষা শুরু হয়েছে। ২৪ মার্চ ওই পরীক্ষা শেষ হবে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রকল্যাণবিষয়ক পরিচালক ইসমাঈল সাইফুল্যাহ বলেন, করোনা মহামারির কারণে শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকায় দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ে সশরীর শিক্ষা কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়, তবে অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চলছিল। এরই ধারাবাহিকতায় অনলাইনের মাধ্যমে বৃহস্পতিবার থেকে কুয়েটে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়েছে। আদালতের নির্দেশনা থাকায় সম্প্রতি বহিষ্কারসহ বিভিন্ন ধরনের শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদেরও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়া হয়েছে। শাস্তি পাওয়া যন্ত্রকৌশল বিভাগের তিনজনসহ বৃহস্পতিবার কেউ কেউ পরীক্ষা দিয়েছেন।

ক্যাম্পাস সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ নভেম্বর ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেকট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং (ইইই) বিভাগের অধ্যাপক ও লালন শাহ হলের প্রাধ্যক্ষ সেলিম হোসেন ক্যাম্পাসের কাছের ভাড়া বাসায় মারা যান। অভিযোগ ওঠে মৃত্যুর দিন দুপুরে বাসায় ফেরার পথে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা অধ্যাপক সেলিমকে বিভাগে তাঁর কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে তাঁর ওপর মানসিক নিপীড়ন চালানো হয়। ওই ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।

গত ২৮ নভেম্বর প্রশাসনের কাছে ৯টি সুপারিশসহ ৪৮ পৃষ্ঠার প্রতিবেদন জমা দেয় ওই কমিটি। এরপর গত ৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র শৃঙ্খলা কমিটির সিদ্ধান্তে চারজনকে চিরতরে কুয়েট থেকে বহিষ্কার, সাতজনকে দুই শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার, একজনকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়। এর বাইরে ২২ জন শিক্ষার্থীকে এক শিক্ষাবর্ষ বহিষ্কার করা হয়। তবে ওই ২২ জনের বহিষ্কার আদেশ আপাতত স্থগিত ছিল। এ ছাড়া ১০ জন ছাত্রকে ১০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও শাস্তি পাওয়া শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত ২৭ জানুয়ারি সাদমান নাহিয়ান ১২ জন শিক্ষার্থীর পক্ষে বহিষ্কারাদেশসহ সব ধরনের শাস্তির বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট ডিভিশনে এক রিট আবেদন করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত ১ ফেব্রুয়ারি রিট আবেদনের শুনানি শেষে তাদের পরীক্ষা দেওয়ার সুযোগ দিতে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশনা দেন। গত ২ ফেব্রুয়ারি আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য সাজা পাওয়া শিক্ষার্থীদের নিজ নিজ বিভাগের বিভাগীয় প্রধানের কাছে চিঠি দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার মো. আনিছুর রহমান ভূঞা।

মো. আনিছুর রহমান ভূঞা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আদালতের নির্দেশনার চিঠি পেয়ে আমরা সেই মোতাবেক তা বাস্তবায়ন করেছি। আইনি অন্য কোনো বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।’

কুয়েট ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদমান নাহিয়ান প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ১২ জনের সবারই কোনো না কোনো পরীক্ষা আছে। কেউ কেউ শুরুর দিন পরীক্ষা দিয়েছেন।

পাঠকের পছন্দ

মন্তব্য করুন