The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
বুধবার, ৩০শে অক্টোবর, ২০২৪

করোনাকালের শিক্ষা শ্রেণিকক্ষের বন্ধ দুয়ার খুলল

ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া ১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থীদের সশরীর ক্লাস নিয়ে জটিলতা। মাউশির ২০ দফা নির্দেশনা।

করোনার সংক্রমণ পরিস্থিতির কারণে দ্বিতীয় ধাপে এক মাস বন্ধের পর আবারও খুলল দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শ্রেণিকক্ষের বন্ধ দুয়ার। প্রথম দফায় আজ মঙ্গলবার খুলল মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো। ২ মার্চ থেকে খুলবে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো।

মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে যেসব শিক্ষার্থী করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, তারাই কেবল শ্রেণিকক্ষে যেতে পারবে। কিন্তু এখনো ১২ বছরের বেশি বয়সী অর্ধেকেরও বেশি শিক্ষার্থী দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারেনি। আবার ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া অনেক শিক্ষার্থীর বয়স এখনো ১২ বছরের কিছু কম। এর মধ্যে ষষ্ঠ শ্রেণির যেসব শিক্ষার্থীর বয়স এখনো ১২ বছরের কম, তাদের বিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশনাও নেই শিক্ষা প্রশাসনের।

একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, টিকা দিতে না পারা শিক্ষার্থীদের ক্লাস নিয়ে কিছুটা অসুবিধা হবে। কারণ, প্রথমত অনলাইন ক্লাসের সুবিধা অনেক শিক্ষার্থীর নেই। আবার সশরীর ক্লাস এবং অনলাইনে ক্লাস, এ দুই কার্যক্রম একসঙ্গে চালিয়ে নেওয়ার মতো সামর্থ্যও অনেক বিদ্যালয়ের নেই।

বিষয়টি নিয়ে অভিভাবকেরাও চিন্তিত। রাজউক উত্তরা মডেল কলেজে ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া এক শিক্ষার্থীর বাবা গতকাল বিকেলে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁর সন্তানের বয়স ১২ বছরের কিছু কম। ফলে তার টিকা দেওয়া যায়নি। এ অবস্থায় তাঁর সন্তানের মতো শিক্ষার্থীদের ক্লাস কীভাবে হবে, সেটি গতকাল বিকেল পর্যন্ত জানতে পারেননি।

অবশ্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) মহাপরিচালক নেহাল আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ষষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ুয়া যেসব শিক্ষার্থীর বয়স এখনো ১২ বছর হয়নি, তারা আপাতত অনলাইনেই ক্লাস করবে। এই বয়সী শিক্ষার্থীর সংখ্যা হতে পারে দুই থেকে তিন লাখের মতো। দু-এক মাসের মধ্যে তাদের বয়স ১২ বছর পূর্ণ হয়ে গেলে টিকা দেওয়া হবে। এ ছাড়া যারা করোনার দ্বিতীয় ডোজ নিতে পারেনি, তারা আপাতত অনলাইনে ক্লাস করবে। শিক্ষার্থীদের টিকার দ্বিতীয় ডোজ দেওয়া এ মাসে শেষ হতে পারে বলে তিনি আশা করেন।

দেশে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত (১২ বছরের বেশি বয়সী) মোট শিক্ষার্থী প্রায় ১ কোটি ২৮ লাখ। মাউশির এডুকেশন ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেমের (ইএমআইএস) এক কর্মকর্তা জানান, প্রথম ডোজ টিকা নেওয়া হয়ে গেছে প্রায় সবার। আর দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিয়েছে ৫০ লাখের মতো শিক্ষার্থী।

বিদ্যালয়গুলোর প্রস্তুতি
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুললেও এখন ক্লাস হবে স্বল্প পরিসরে। অর্থাৎ গত জানুয়ারিতে শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর যেভাবে ক্লাস হচ্ছিল, সেভাবেই ক্লাস হবে। গত জানুয়ারিতে নতুন শিক্ষাবর্ষ শুরুর পর ২০২২ সালের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন চারটি বিষয়ের ওপর ক্লাস হচ্ছিল। আর দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের প্রতিদিন তিনটি বিষয়ের ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল। অষ্টম ও নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে দুই দিন ক্লাস হয়। এই দুই দিনের প্রতিদিন তিনটি করে বিষয়ের ওপর ক্লাস নেওয়া হচ্ছিল। এ ছাড়া ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের জন্য সপ্তাহে এক দিন তিনটি বিষয়ে ক্লাস নেওয়া হয়।

রাজধানীর শহীদ মনু মিয়া সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রেবেকা সুলতানা জানান, যারা দ্বিতীয় ডোজ টিকা নিতে পারেনি বা যারা বয়সজনিত সমস্যায় টিকা নিতে পারেনি, তাদের আপাতত বাড়িতে থাকতে খুদে বার্তা দিয়েছেন। তাদের পাঠদান অনলাইন ও অ্যাসাইনমেন্টের মাধ্যমে হবে।

১২ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থী এবং যারা দ্বিতীয় ডোজ টিকা পায়নি, তাদের অনলাইন পাঠদানের ওপর জোর দিচ্ছে মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ শাহান আরা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, গত এক মাস বন্ধের সময়ও তাঁরা প্রতিদিন অনলাইনে ক্লাস করিয়েছেন।

মাউশির নির্দেশনা
করোনার সংক্রমণের কারণে ২০২০ সালের ১৭ মার্চ দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করেছিল সরকার। দীর্ঘ ১৮ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে বেশ কিছু নির্দেশনা মেনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলা হয়েছিল। এবারও ২০ দফা নির্দেশনা জারি করেছে মাউশি।

নির্দেশনাগুলো হলো—যেসব শিক্ষার্থী করোনার টিকার দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছে, সশরীর শ্রেণি কার্যক্রমে শুধু তাদেরই অংশ নেওয়া; শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রবেশপথে সব শিক্ষক-কর্মচারী, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকের শরীরের তাপমাত্রা পর্যবেক্ষণের ব্যবস্থা করা; পরিস্থিতি বিবেচনায় অনলাইন বা ভার্চ্যুয়াল প্ল্যাটফর্মে পাঠদান এবং অ্যাসাইনমেন্ট কার্যক্রম অব্যাহত রাখা; শিক্ষার্থীদের ক্লাসের সূচি আগের নির্দেশনা মেনে প্রণয়ন করা; ভিড় এড়াতে প্রতিষ্ঠানের সব ঢোকা ও বের হওয়ার পথ ব্যবহারের ব্যবস্থা করা এবং প্রতিষ্ঠান খোলার প্রথম দিন শিক্ষার্থীদের আনন্দঘন পরিবেশে শ্রেণি কার্যক্রমে স্বাগত জানানোর ব্যবস্থা করা ইত্যাদি।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.