The Rising Campus
Education, Scholarship, Job, Campus and Youth
রবিবার, ৩রা নভেম্বর, ২০২৪

ইবি ছাত্রলীগ সভাপতির অর্থ লেনদেনের কন্ঠসদৃশ অডিও ভাইরাল

ইবি প্রতিনিধি : ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) পরিবহন পুলের ড্রাইভার নিয়োগে অর্থ লেনদেনে ইবি ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের ‘কণ্ঠসদৃশ’ কথোপকথনের দুটি রেকর্ড সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়েছে। তবে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি এই কথোপকথনে নিজের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে দাবি করেছেন।

গত বুধবার সন্ধ্যায় সানজিদা আক্তার তানিয়া নামক ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি এবং বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস নামক পেজ থেকে ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের আরেকটি অডিও ছড়িয়ে পরে। রেকর্ডকৃত ওই কথোপকথনে মিলন ড্রাইভারের নিয়োগ, নিয়োগের দেড় মাসেও চুক্তিকৃত ২০ লখ টাকা পেতে বিলম্ব হওয়া, নিয়োগের সাথে শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের জড়িত থাকার বিষয়টি উঠে এসেছে।

কথোপকথনে ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের কণ্ঠসদৃশ ব্যক্তিকে বলতে শোনা যায়, ১ মাস সময় নিয়ে ৩ তারিখের কথা বলে আজ ১৫ তারিখ অর্থাৎ দেড় মাস হয়ে গেল। কি করবে না করবে সেটা তো আমার দেখার বিষয় না; আমার দেখার বিষয়? মাগুরা আমার এক ভাই আছে ওকে দিলে ২৫ লাখ টাকা পেতাম আমি। ওই ভাই টাকা নিয়ে বসেছিল, ওই যে আমার বিপুল আছে, চেয়ে নিতে যাবো কেন আমি! এক একজন ২০ লাখ টাকা খুশি হয়ে দিত। ওর চাকরির জন্য হাবিবুরের চাকরি হলো না; হাবিবুর তো আমার ভাগ্নে।

কথোপকথনে তাকে আরও বলতে শোনা যায়, হেলপারের চাকরির জন্য ২০ লাখ টাকা দিতে চায়, এতো ড্রাইভার! ওতো গাড়ি চালাতেই পারে না, গাড়ির টায়ার পর্যন্ত চেনে না ও। বিকেলে ভিতরে এসে প্রতিদিন গাড়ি চালানো শিখছে; তাহলে সে লোকের তো একটা বিবেক থাকা উচিত! কয় আমি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ি, হেন-তেন সাত সতেরো! ওর তো একটা বিবেক হওয়া উচিত, উচিত না?

আমি তো একদম সাইলেন্ট হয়ে আছি। তাহলে ওতো হিসাব-নিকাশ ক্লিয়ার করবে। ও ১০ বা ২০ হাজার কম দিবে আরও কম দিক; আমার তো কম নীতি সমস্যা নেই। জয় (সাধারণ সম্পাদক ইবি শাখা ছাত্রলীগ), জয়ের বুঝটা পেয়ে গেছে, পেয়ে যায়নি? দুইটার একটা পেয়ে গেছে। জয় আমাকে বললো ভাই মিলন আপনার আত্মীয় মানুষ আপনার বাড়ির পাশে, যায় হোক না হোক আপনি মিলনের সাথে বুঝে নেন গা।

জয় ঐটা থেকে আমাকে কিছুই দেইনি। আর জয় যদি এতক্ষন না পেত তাহলে ও তো পাগলা কুত্তার মত হয়ে যেত। জয়ের কী এখন কোন জ্বালা আছে! ওর তো কোন জ্বালা নেই। ওরটা ও পুরোটাই পেয়ে গেছে; মানে সিন্ডিকেটের ৩ তারিখ, ৩ তারিখ বিকালেই পেয়ে গেছে। মানে এখন থেকে দেড় মাস হয়ে গেল; দেড় মাস আগেই নিয়ে নিছে। আর মিলনেরটা আমার উপর দিয়ে দিছে। এবার আমার আম ছালা সব ডুকেছে। এখন ওর চাকরিই যদি না থাকে তাহলে তো……

ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত ঘটনার সত্যতা অস্বীকার করে বলেন, এই ঘটনার সাথে আমার বিন্দু পরিমাণ সংশ্লিষ্টতা নেই। কেউ যদি প্রমাণ করতে পারে যে চিনির দানা পরিমাণ কিছু আমি পাইছি তবে আমি আমার পদ ছেড়ে চলে যাব। নির্বাচনের সামনে আমার চরিত্র হননের জন্য কেউ ভুয়া আইডি থেকে এসব করতেছে। আমি নিজেও খোঁজ নিচ্ছি এর পেছনে কে আছে। আমি চাই সত্য ঘটনা বেরিয়ে আসুক। আমি নিজেও যদি দোষী হই তবে আমি শাস্তি পেতে রাজি আছি। আমি এখন ক্যাম্পাসের বাহিরে আছি। আমি ক্যাম্পাসে গিয়ে এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

এদিকে বৃহস্পতিবার ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস’ নামক আরেক পেজে ছাত্রলীগ সভাপতির টাকা লেনদেনের আরেকটি কন্ঠসদৃশ অডিও জনসম্মুখে আসে।

এ বিষয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত ডাইভার মিলনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি পরীক্ষা দিয়ে পাশ করেছি। আমার যোগ্যতায় আমার চাকরি হয়েছে। এখানে কোন প্রকার আর্থিক লেনদেনের সংশ্লিষ্টতা নেই। কে বা কারা এ বিষয়টি রটিয়েছে তা আমার জানা নেই।

এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় বলেন, বিষয়টি যেভাবে এসেছে তার কোন সত্যতা নেই। এটা এডিটও হতে পারে অথবা কর্তৃপক্ষের নোংরা ষড়যন্ত্রও হতে পারে। সামনে জাতীয় নির্বাচন তাই নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসের পরিবেশ নষ্ট করার একটি পায়তারা

এ বিষয়ে ইবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম বলেন, একজন ড্রাইভার কয় টাকা বেতন পাবে সেইখানে ২০ লাখ টাকা! এই টাকা দিয়ে তো একটা গাড়ি কেনা যায়। এ বিষয়ে মিলন ড্রাইভার এবং আরাফাতকে জিজ্ঞেস করেন। এ সম্পর্কে আমি কিছুই জানি না।

কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক মেফতাহুল ইসলাম পান্থ বলেন, সত্যতা যাচাই-বাছাই করতে হবে সেটা পরের হিসেব। কিন্তু এই বিষয়ে যদি সত্যতা থেকে থাকে তাহলে শুধু এই ব্যাপারে না যেকোনো ব্যাপারেই কোন অপরাধীর জায়গা ছাত্রলীগে নেই। সে যদি ছাত্রলীগের পোস্টেড কেউ হয় বা যে কেউ হোক না কেন তার বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

You might also like
Leave A Reply

Your email address will not be published.