বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি না হতে পরামর্শ দিয়েছে। একইসঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রমের আইনি কোনো ভিত্তি নেই বলে জানিয়েছে।
ইউজিসি জানিয়েছে এই বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে গঠিত তদন্ত কমিটির সুপারিশের প্রেক্ষিতে ইউজিসি এই পরামর্শ দিয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদন বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমের জন্য দেশের উচ্চশিক্ষা সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী নেতিবাচক ভাবমূর্তি তৈরি হচ্ছে বলেও অভিমত দিয়েছে ইউজিসি।
এ বিষয়ে ইউজিসি সদস্য (বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুযায়ী বিশ্ববিদ্যালয়টি সাময়িক অনুমতিপত্রের মেয়াদের মধ্যে সনদপত্রের জন্য আবেদন করেনি এবং সনদপত্র পাওয়ার জন্য শর্তগুলো পূরণেও ব্যর্থ হয়েছে। এ জন্য বিশ্ববিদ্যালয়টির কার্যক্রমের আইনগত কোনো ভিত্তি নেই। এ জন্য জনস্বার্থে শিক্ষার্থীদের এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি না হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
‘অভিভাবকহীন’ এই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে বিশ্বজিৎ চন্দ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ২০০৬ সালের পর আচার্য ও রাষ্ট্রপতির নিয়োগ করা কোনো উপাচার্য, সহউপাচার্য এবং কোষাধ্যক্ষ নেই। বর্তমানে বৈধ কোনো কর্তৃপক্ষ নেই। এ ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়টির সব শিক্ষাক্রমের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ায় এসব একাডেমিক প্রোগ্রাম বৈধতা হারিয়েছে। বৈধ সিন্ডিকেট এবং একাডেমিক কাউন্সিল না থাকায় বিশ্ববিদ্যালয়টির একাডেমিক, প্রশাসনিক, আর্থিক, ভর্তি, পরীক্ষা ও ফলাফল এবং একাডেমিক সনদের আইনগত কোনো বৈধতা নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ বিষয়ে আজ ইউজিসির এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, আমেরিকা বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি ২০০২ সালের ১৯ আগস্ট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে স্থাপন ও পরিচালনার সাময়িক অনুমতি পায়। সাময়িক অনুমতিপত্রের শর্তাবলি প্রতিপালন ও গুণগত শিক্ষা নিশ্চিত করতে ব্যর্থ হওয়ায় ২০০৬ সালে সরকার এই বিশ্ববিদ্যালয়টি বন্ধ ঘোষণা করে। এই আদেশের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উচ্চ আদালতে রিট করে স্থগিতাদেশ নিয়ে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়টির বোর্ড অব ট্রাস্টিজের দাবিদার তিনটি পক্ষ বিভিন্ন ঠিকানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।