বেরোবি প্রতিনিধি: বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে (বেরোবি) জুলাই-আগষ্ট বিপ্লবের প্রথম শহীদ আবু সাইদের স্মরণে আন্তবিভাগ ফুটবল টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে।
শনিবার (৩০ নভেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. মোঃ সিদ্দিকুর রহমান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে এটি জানানো হয়।
এখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ২২টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহণ করবে। প্রতি বিভাগে ১৫ জন ছাত্র ও ১৫ জন ছাত্রী নিয়ে দুইটি দল। দলে ম্যানেজার হিসেবে ০২ জন শিক্ষক (শিক্ষক/শিক্ষিকা), কোচ হিসেবে ০১ জন ও বিভাগীয় ছাত্র উপদেষ্টা (যদি থাকে)। বিশ্ববিদ্যালয়ে এর আগেও খেলাধুলার জন্য বিভিন্ন টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হলেও এইরকম জাকজমকপূর্ণ আয়োজন কখনো করতে দেখা যায় নি। এই ফুটবল টুর্নামেন্টে ২২ টি বিভাগের ২২ টি ছেলেদের টিম অংশগ্রহণ করলেও প্রমিলাদের ফুটবল খেলায় বিভিন্ন বিভাগের মাত্র আটটি টিম অংশগ্রহণ করছেন। বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা জীবনে মাত্র দুইবার প্রমিলাদের জন্য ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হয়েছে। এর আগে সর্বপ্রথম প্রমিলারা ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করেছে ২০১৭ সালে।
এই বিষয়ে ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. রায়হান কবীর বলেন, শহীদ আবু সাইদ-এর স্মরণে ফুটবল টুর্নামেন্ট আয়োজন একটি অত্যন্ত প্রশংসনীয় উদ্যোগ। এটি কেবল একটি ক্রীড়া প্রতিযোগিতা নয়, বরং শহীদ আবু সাইদের জীবন ও আদর্শকে নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম। তাঁর আত্মত্যাগ আমাদের জন্য এক চিরন্তন প্রেরণা। এই টুর্নামেন্টে তরুণরা খেলাধুলার মাধ্যমে শারীরিক ও মানসিকভাবে সুস্থ থাকার সুযোগ পাবে। একইসাথে, এটি আমাদের সমাজে একতা, সম্প্রীতি এবং খেলাধুলার গুরুত্বকে প্রচার করবে।
আমি এই টুর্নামেন্টের সফলতা কামনা করছি এবং আশা করি, এটি ভবিষ্যতে আরও বড় পরিসরে আয়োজন করা হবে। শহীদ আবু সাইদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা জানানোর জন্য এমন উদ্যোগ অব্যাহত থাকুক।
শহীদ আবু সাইদের সহযোদ্ধা সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সবুর খান বলেন,আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে শহীদ আবু সাইদের স্মরণে যে ফুটবল টুর্নামেন্টের আয়োজন করা হচ্ছে তা সত্যিই প্রসংশনীয় উদ্যোগ। আবু সাইদের নামাঙ্কিত এই টুর্নামেন্ট সফল হোক ঠিক যেমনটি সফলতা পেয়েছি আমরা ফ্যাসিবাদী আন্দোলনে।
আবু সাঈদের বাবা তার বক্তব্যে বলেন, আপনাদের অনেক ধন্যবাদ আমার ছেলের নামে খেলার আয়োজন করার জন্য। আমার ছেলের জন্য সবাই দোয়া করবেন।
ইতিহাস ও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের শিক্ষার্থী ফাহমিদা আক্তার মৌরী বলেন, প্রতিবছর একটা নির্দিষ্ট সময়ে শহীদ আবু সাইদ স্মরণে এরকম টুর্নামেন্ট আয়োজন হলে বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করবে। খেলাধুলা ও শরীরচর্চার মধ্য দিয়ে প্রাণবন্ত তরুণরাই সামনের চলার পথে সাহসী হবে, হবে উদ্যমি।
শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. মোঃ সিদ্দিকুর রহমান বলেন, আবু সাইদ আমাদের অস্তিত্বে আবু সাইদ আমাদের ঐক্যের প্রতীক, আবু সাইদ আমাদের সাহসিকতার প্রতীক এবং আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়ার প্রেরণা। খেলাধুলার মাধ্যমে ভ্রাতৃত্বের সৃষ্টি হয়। তবে এই খেলাধুলার মাধ্যমেই আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। এধরণের আয়োজনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কে কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানাই। তিনি আরও বলেন যে, আমরা এই খেলার মাধ্যমে বৈষম্যহীন বাংলাদেশের যে যাত্রা শুরু হয়েছে, তা যেনো অব্যহত থাকে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শওকাত আলী বলেন, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় এরকম বড় বড় খেলাধুলার আয়োজন আমরা প্রতিনিয়তই করার চেষ্টা করব। খেলাধুলার মধ্যে থাকলে শিক্ষার্থীদের মন এবং স্বাস্থ্য দুটোই ভালো থাকবে। আমরা চাই আমাদের শিক্ষার্থীরা খেলাধুলার মধ্যে থাকুক আর মাদককে না বলুক। মাদকের হাত থেকে বাঁচতে হলে আমাদের খেলাধুলার দিকে মনোযোগ দিতে হবে। খেলাধুলায় বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয় অনন্য হয়ে উঠবে বলে মনে করেন।